চলতি অর্থবছরের কৃষি ও শিল্পে কম প্রবৃদ্ধির প্রভাব জিডিপিতে
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের কৃষি, শিল্প, সেবা সব খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় কমেছে।
কৃষি খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ২.৬১%। এ খাতে এর আগের অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩.০৫%।
২০২২-২৩ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি ৮.১৮%, যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৯.৮৬%।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, ম্যানুফ্যাকচারিং (শিল্প) খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ২.১৮%। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.২৩%, এ খাতে এর আগের অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১.৪১%।
তবে এ সময়ে ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রি খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪.৮৯%।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, সেবা খাতেও কমেছে প্রবৃদ্ধি। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ৬.২৬% থেকে কমে ৫.৮৪% হয়েছে।
সোমবার বিবিএস তাদের ওয়েবসাইটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে। এর আগে গত ১১ মে জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সাময়িক হিসাবে ৬.০৩% প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
এর আগের অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসাবে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.১০%।
জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডিমান্ড সাইডে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব সব খাতে পারচেজ পাওয়ারকে কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে সরবরাহ খাতে ডলার সংকট প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করেছে।
ডলার সংকটের কারণে যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল প্রয়োজন অনুযায়ী আমদানি করা সম্ভব হয়নি। জ্বালানি সংকট, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং গ্যাস দিতে না পারা সব হয়েছে ডলার সংকটের কারণে। এ কারণে ক্যাপাসিটি ইউটিলাইজেশন এবং বিনিয়োগ দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবার শিল্প এবং কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি যখন কমে যায়, তখন সেবাখাতে এর প্রভাব পড়ে। পরিবহন খাতে মূল্য সংযোজন নির্ভর করে উৎপাদনের ওপর। শিল্প ও কৃষি খাতে উৎপাদন প্রবৃদ্ধি কমলে সেবা খাতেও প্রবৃদ্ধি কমতে বাধ্য।
এদিকে বিবিএসের হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির আকার কমে হয়েছে ৪৫৩,৮৫২ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে আগের অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৬০,২১৯ মিলিয়ন ডলার।