বৈশ্বিক কন্টেইনার পরিবহন সূচকে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম
কন্টেইনার পরিবহন ও সংরক্ষণ পরিসংখ্যানে চট্টগ্রাম বন্দর শীর্ষ ১০০ বন্দরের মধ্যে ৬৭তম স্থান অধিকার করেছে।
লন্ডনভিত্তিক শিপিং মিডিয়া আউটলেট লয়েডস লিস্টের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের পারফরম্যান্স অনুযায়ী এই সূচক প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ৩০,৫০,৭৯৩ টিইইউ (টুয়েন্টি-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) কন্টেইনার পরিবহন ও সংরক্ষণ করেছে, যা ২০২২ সালে পরিবহণ ও সংরক্ষাণ করা ৩১,৪২,৫০৪ টিইইউ থেকে সামান্য কম।
এই সময়কালে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কন্টেইনার পরিবহন ও সংরক্ষণ ৯১,৭১১ টিইইউ কমেছে। এর আগেও, চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৩ সালের শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকায় ৬৭তম স্থানে ছিল।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক টিবিএসকে জানান, ২০২৩ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, যার ফলে বাংলাদেশে মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পায়। এর প্রতিক্রিয়ায়, সরকার বিলাসবহুল পণ্যের আমদানির ওপর কঠোর নিয়মাবলি আরোপ করে। ফলে আমদানিকারকরা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হন, যা সেই বছরে বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে হ্রাস ঘটায়।
বন্দর কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন যে ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বন্দরে একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে, যা কন্টেইনারের পরিমাণ কমলেও চট্টগ্রাম বন্দরের সূচক নিচে নামাতে পারেনি। তারা আরও জানান, বৈশ্বিক মন্দা না থাকলে, কম পরিবহন ও সংরক্ষণের কারণে বন্দরের সূচকে আরও নিচে নেমে যেত।
লয়েডস লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, চীনের শাংহাই বন্দর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৩ সালে ৪৯,১৫৮,৩০০ টিইইউ পরিবহণ ও সংরক্ষণ করেছে সাংহাই বন্দর। আর তার পরেই রয়েছে সিঙ্গাপুর বন্দর, যা ৩৯,০১০,০০০ টিইইউ পরিবহণ ও সংরক্ষণ করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের মোট সমুদ্র বাণিজ্যের ৯২% এবং কন্টেইনার ট্রাফিকের ৯৮% পরিচালনা করে। তবে, বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত মোট কার্গোর মধ্যে কন্টেইনারের পরিমাণ মাত্র ২৭%, বাকী ৭৩% বাল্ক ক্যারিয়ার এবং ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
লয়েডস লিস্টে বন্দরের র্যাংকিং সময়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে বন্দরটি। বন্দরটি ২০১০ সালে এটি ৮৮তম স্থানে ছিল, ২০১১ সালে ৮৯তম, ২০১২ সালে ৯০তম, ২০১৩ সালে ৮৬তম, ২০১৪ সালে ৮৭তম, ২০১৫ সালে ৭৬তম, ২০১৬ সালে ৭১তম, ২০১৭ সালে ৭০তম, ২০১৮ সালে ৬৪তম, ২০১৯ সালে ৫৮তম এবং ২০২০ সালে ৬৭তম স্থানে ছিল।
২০২১ সালে, চট্টগ্রাম বন্দর তিন ধাপ এগিয়ে ৬৪তম স্থানে উঠে আসে, এরপর ২০২২ এবং ২০২৩ সালে আবারও ৬৭তম স্থানে ফিরে আসে।