ড্রাগ লর্ড পাবলো এস্কোবারের জলহস্তিগুলোকে ‘খোজা’ করে দিচ্ছে কলম্বিয়া
১৯৮০-এর দশকে ড্রাগ লর্ড পাবলো এস্কোবারের ভয়ে কাঁপত কলম্বিয়ার মানুষ। খুন, অপহরণ, মাদক ব্যবসা করে অঢেল টাকা কামিয়েছিলেন তিনি।
মারা যাওয়ার আগে ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানায় কয়েকটি বিদেশি জলহস্তি আমদানি করেছিলেন এস্কোবার।
ড্রাগ লর্ড নেই, কিন্তু রয়ে গেছে তার আমদানি করা জলহস্তি। সেগুলো এখন বহুগুণে বেড়ে কলম্বিয়ার প্রধান জলপথ, ম্যাগডালেনা নদীর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কলম্বিয়ার প্রধান নদী ম্যাগডালেনা এখন এই জলহস্তিদের 'কবলে'।
পরিস্থিতি এমনই নাজুক হয়ে পড়েছিল, জলহস্তিগুলোকে মেরে তাদের সংখ্যা কমিয়ে কলম্বিয়ার ওই অঞ্চলের পরিবেশ বাঁচানোর কথা ভাবছিলেন পরিবেশবিদেরা।
তবে প্রাণীগুলোকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তারা। ওগুলোকে এখন 'খোজা' করে দেওয়া হচ্ছে।
১৯৯৩ সালে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে এস্কোবার মারা যান। আমদানি করা জলহস্তিগুলো এস্কোবারের মৃত্যুর পর তার র্যাঞ্চ হাসিয়েন্দা নাপোলেসের আশেপাশেই থেকে যায়। তারপর সংখ্যায় বাড়তে বাড়তে ৮০ ছাড়িয়ে যায়। অথচ এস্কোবার আনার আগ পর্যন্ত কলম্বিয়ায় কোনো জলহস্তিই ছিল না।
কলম্বিয়ান সরকার এখন পর্যন্ত ২৪টি জলহস্তিকে খোজা করেছে। এক ধরনের রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়েছে সেগুলোর ওপর। ফলে জন্তুগুলো আর সন্তান জন্ম দিতে পারবে না।
কলম্বিয়ান পরিবেশবিদরা বলছেন, ড্রাগ লর্ডের জলহস্তিগুলো স্থানীয় প্রাণীকুলকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
জলহস্তিগুলোকে মেরে ফেলতে বা বন্ধ্যা করে দিতে অনেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
পরিবেশবিদরা বলছেন, বাড়তি জলহস্তি স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র বদলেও ফেলতে পারে জন্তুগুলো। জলহস্তির দাপটে স্থানীয় প্রাণী প্রজাতি এখনই বিলুপ্তির আশঙ্কায় রয়েছে।
তাছাড়া জন্তুগুলো জলপথের রাসায়নিক গঠন বদলে দিতে পারে, যার ফলে বিপন্ন হতে পারে মৎস্যকুল। যদিও কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, জলহস্তিগুলো আদতে পরিবেশকে সাহায্যও করতে পারে।
- সূত্র: বিবিসি