পংগংসো হ্রদে চীনা সেনাদের রুখতে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী
লাদাখে চীন-ভারত সীমান্তে আছে হিমবাহ গলা পানির স্বচ্ছ হ্রদ পংগংসো। পর্বতের খাঁজে জন্ম নেওয়া হৃদটির বেশ কয়েকটি জায়গা এমন যেগুলো হ্রদের কিনারায় পার্বত্যঢালের প্রসারিত অংশ। আকাশ থেকে এগুলোকে পর্বতের আঙ্গুলের মতোই দেখায়, তাই ফিঙ্গার ১-৮ ইত্যাদি নামে ডাকা হয় এদের।
সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ভারতের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নতুন করে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় ফিঙ্গার ৪ এর কাছে ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছে চীনা সেনাবাহিনী। ভারতের দাবি, হ্রদটির এ অংশ তাদের। এ অবস্থায় চীনের গণমুক্তি ফৌজের মোকাবিলায় ফিঙ্গার-৪ এর কাছে পাহাড়ের উঁচু বাকে অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ কিছু ইউনিট।
ভারতীয় সেনা সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে দেশটির গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এসব তথ্য জানিয়েছে। তবে সূত্রটি আরো জানায়, গত এপ্রিলেই চীনা সেনারা প্রথম ভারতীয় অংশে অনুপ্রবেশ করে। ওই সময়েই তারা ফিঙ্গার-৪ এ ছাউনি স্থাপন করেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে, তাদের ঠিক বিপরীত দিকে ছাউনি স্থাপন করে মুখোমুখি অবস্থানে আছে ভারতের বিশেষ সেনা সদস্যরা।
এমন সময় এ তথ্য জানানো হলো, যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী পংগংসো হ্রদের দক্ষিণ পাড়ের কৌশলগত অবস্থান দখল করার কথা জানিয়েছে। গণমুক্তি ফৌজকে ঠেকাতেই অগ্রিম সতর্কতার অংশ হিসেবে এ মোতায়েন বলে জানানো হয়। তাদের দাবি, ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আকস্মিক অবস্থানে বিস্মিত হয়ে পড়েছে চীনা সেনাবাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারতের প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা দ্য প্রিন্টকে আরো জানান, চলতি সপ্তাহে সেনা মোতায়েনের কৌশল বদলেছে ভারত। পরিবর্তিত কৌশলের সহায়তায় ফিঙ্গার ৪ সংলগ্ন উঁচু বাঁক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছাউনি স্থাপন করতে সক্ষম হয় দেশটির সৈন্যরা।
এ অবস্থায় চীন ও ভারতীয় সেনারা মুখোমুখি অবস্থানে আছে বলে নিশ্চিত করেছে সূত্রটি।
নাম না প্রকাশের শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, পূর্ব সতর্কতামূলক মোতায়েনের ঘটনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার এপাড়ে নিজ অংশের মধ্যেই করেছে ভারত।
''শত্রুকে উঁচু স্থানে থাকতে দিয়ে আমাদের সৈন্যদের সমভূমিতে অবস্থানের কোনো অর্থ হয় না। একারণেই তা পরিবর্তন করে সুবিধাজনক জায়গায় সেনা পুনঃমোতায়েন করা হয়'' তিনি যোগ করেন।
এর আগে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশে একাধিকবার চীনা সেনা অনুপ্রবেশের সংবাদ প্রকাশ করেছিল দ্য প্রিন্ট। এসময় তারা পংগংসো হ্রদের উত্তর পাড়ে চীনা সেনাদের অবস্থান নেওয়ার কথাও জানিয়েছিল।
এসব অনুপ্রবেশের মাধ্যমে পংগংসো হ্রদের ফিঙ্গার ৪-৮ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা ফৌজ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যা ভারতের দাবিকৃত এলাকার মধ্যে পড়েছে।