‘সুখ বলে কিছু নেই’ তলস্তয়ের উক্তি আওড়ে বন্ড খলনায়কের খেতাব পেলেন পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জেমস বন্ডের খলনায়কের সাথে তুলনা করা নতুন কিছু নয়। পশ্চিমা গণমাধ্যম প্রায়ই পুতিনকে নিয়ে এধরনের রসিকতা করতে ভালোবাসে।
তবে, এবার পুতিনের খোঁচা দেওয়া মন্তব্যের পর যেন তার বন্ড খলনায়কের অবদমিত রূপটিই প্রকাশ পেয়েছে।
বুধবার জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন পুতিন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনায় আস্থা ও প্রসন্নতা বাড়লো কিনা এ বিষয়ে পুতিনের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়।
প্রতিক্রিয়ায় পুতিন জানান, "জীবনে সুখ বলে কিছু নেই। সুখ কেবল দিগন্তে দেখা মেলা এক মরীচিকা, আর তা দেখেই উদযাপন করুন।"
সম্মেলনে পশ্চিমা প্রতিবেদকদের কাছে বর্ণিত উক্তিটি প্রকৃতপক্ষে রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের। বলা হয়ে থাকে, আরেক আলোচিত রুশ লেখক ইভান বুনিনের কাছে এই মন্তব্য করেছিলেন তলস্তয়।
২৩ বছরের বুনিনের সাথে ১৮৯৪ সালে 'ওয়ার অ্যান্ড পিস'খ্যাত তলস্তয়ের দেখা হয়। তখন তার বয়স ৬৫।
তুষারাবৃত সেই রাতে সম্ভাবনাময় তরুণ বুনিনকে তলস্তয় শুনিয়েছিলেন বিভিন্ন জ্ঞানগর্ভ কথা। তবে পাশাপাশি, তিনি "জীবন সম্পর্কে উচ্চাশা পোষণ না করা'র পরামর্শও দিয়েছিলেন।
বুনিন এতোটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে তিনি তলস্তয়কে অনুকরণ করা শুরু করেন। ভিন্ন সম্প্রদায়ের বসতিতে যাওয়া আসার পাশাপাশি তিনি অবৈধভাবে তলস্তয়ের সাহিত্যও বিতরণ করতেন।
পরবর্তীতে, তলস্তয় এবং তার সমসাময়িক আন্তন চেখভের হাত ধরে শুরু হওয়া রিয়েলিস্ট রুশ সাহিত্যের যোগ্য উত্তরসূরীতে পরিণত হন বুনিন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, অনেকেই বলছেন যে পুতিনের বক্তব্য তার বন্ড খলনায়ক ভাবমূর্তির সাথে মানানসই।
একজন মন্তব্য করেন, "কোনো বিশ্ব নেতার মুখে আজ পর্যন্ত শোনা বক্তব্যের মধ্যে এটি ছিলো একইসঙ্গে সবথেকে প্রকটভাবে রুশ এবং বন্ড খলনায়কের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা বক্তব্য।"
অনেকে অবশ্য পুতিনকে মারভেলের খলনায়কের সাথেও তুলনা করেছেন। তারা বলছেন, মন্তব্যটি যেন স্বয়ং থানোসের কাছ থেকেই শুনলেন।
এদিকে, সম্মেলনে বাইডেন ও পুতিনের প্রথম আলোচনা বেশ অস্বস্তিকর ছিল বলেই ধারণা করছেন অনেকে। আলোচনা কক্ষে প্রবেশের পূর্বে সাংবাদিকরা পেছন থেকে বাইডেন ও পুতিনকে প্রশ্ন করছিলেন যে তারা পরস্পরকে বিশ্বাস করেন কিনা।
বাইডেনকে উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, তিনি পুতিনের ওপর ভরসা রাখেন কিনা। বাইডেন তখন সম্মতিসূচক ইঙ্গিত জানিয়ে মাথা নেড়েছিলেন বলে প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
তবে, হোয়াইট হাউজ পুতিনকে 'ভরসা' করার বিষয়ে বাইডেনের এই সম্মতি প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।