এবারের মুকুটও বসুন্ধরা কিংসের
পুরো আসরজুড়ে ছিল তাদের দাপট। যোগ্যতর দল হিসেবেই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছিল বসুন্ধরা কিংস। শিরোপার লড়াইয়েও তাদের দাপট দেখা গেল। প্রথমার্ধে হতাশা সঙ্গী হলেও দ্বিতীয়ার্ধে সেটা পুষিয়ে নিয়ে দুর্দোন্ড প্রতাপে ফিরে আসে দলটি। যে প্রতাপের বিপক্ষে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। দারুণ এক জয়ে ওয়ালটন ফেডারেশন কাপের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস।
রোববার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বুসন্ধরা কিংস। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতলো ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় বাজেটের দল বসুন্ধরা কিংস। দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন বসুন্ধরার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার রাউল বেসেরা।
রাউল বেসেরার গোলে বসুন্ধরার জয় নিশ্চিত হলেও বিশেষ কৃতিত্ব দিতে হবে তাদের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে। পুরো ম্যাচজুড়ে চীনের প্রাচীল তুলে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের এই নিয়মিত গোলরক্ষক। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ থেকে দলকে অসাধারণ দক্ষতায় বিপদমুক্ত করেছেন জিকো।
প্রথমার্ধে দুই দলই সমানে সমান লড়াই করেছে। মুহূর্মুহ আক্রমণে কেটেছে সময়। যদিও অনেক সুযোগ তৈরি করেও কোনো দল গোল আদায় করে নিতে পারেনি। গোলশূণ্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। তবে বিরতি থেকে ফিরে দুই দলই গতিময় ফুটবল খেলতে থাকে।
৪৮ মিনিটে অনেক দূর থেকে বুলেট গতির শট নেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের রহমত মিয়া। দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। যদিও প্রথম চেষ্টায় বল গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় চেষ্টায় বল ভল হাতে নিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন জিকো।
৫২তম মিনিটে বসুন্ধরা শিবিরে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাউল বেসেরার গোলে এগিয়ে যায় দলটি। গোল দিয়ে বসুন্ধরার গতি যেন আরও বেড়ে যায়। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত বসুন্ধরার আধিপত্য ছিল। কিন্তু এরপর থেকে ম্যাচের দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব গতি বাড়িয়ে একের পর এক আক্রমণ সাজাতে থাকে। এ সময়ে সাইফের আক্রমণ ফেরাতেই ব্যস্ত থাকতে হয় বসুন্ধরার ফুটবলারদের।
৬৯ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ সাজায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। ইকেচুকু কেনেথের ডান পায়ে অসাধারণ এক শট নেন। অসাধারণ শট ফেরাতে বসুন্ধরার গোলরক্ষক জিকো হয়ে ওঠেন উড়ন্ত বলাকা। ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন তিনি। ৭৩ মিনিটে আবারও কেনেথের আক্রমণ। এবার তার নেওয়া শট বার ঘেষে বেরিয়ে যায়।
৮৬তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে মাথা ছুঁয়ে দেন কেনেথ। কিন্তু দেয়াল তুলে দাঁড়িয়ে থাকা জিকোর কারণে এবারও গোলের দেখা পায়নি সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। লাফিয়ে উঠে অসাধারণ দক্ষতায় ফিস্ট করে বল বাইরে পাঠান জিকো। কর্নার থেকে পাওয়া বলে শট নেন জন ওকোলি। যথারীতি জিকোর বাধায় সাফল্য পায়নি সাইফ। ৮৯তম মিনিটে বসুন্ধরার জনাথন ফার্নান্দেসের দারুণ শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন সাইফ স্পোর্টিংয়ের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন।