কঠিন পরিস্থিতিতে ভালো বোলিং করায় দৃষ্টি হাসানের
ছোট্ট ক্যারিয়ার, এর মধ্যে চোটই কেড়ে নিয়েছে বেশি সময়। পেসার হওয়ায় বাস্তবতা মানলেও খেই হারানোর পাত্র নন হাসান মাহমুদ। প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফেরেন জাতীয় দলে। চোট থেকে ফিরেই জিম্বাবুয়ে সফরে দারুণ বোলিং করেন তরুণ এই পেসার।
কিন্তু কদিন পর আবারও চোট। দীর্ঘদিন পর দলে সেই চোটের কারণেই খেলা হয়নি এশিয়া কাপে। তবে জিম্বাবুয়ে সফরের পারফরম্যান্স দিয়েই বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন হাসান। বিশ্বকাপ মঞ্চে খেলার জন্য প্রথমবারের মতো ডাক মিলেছে তার। ডানহাতি এই পেসারের লক্ষ্য এবার নিজেকে উন্নত করে কঠিন পরিস্থিতিতে ভালো বোলিং করা।
গত কিছু দিনে কঠিন পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে বেশ আলোচনা হয়েছে। এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই যে বাংলাদেশ বিদায় নিয়েছে, তার অন্যতম কারণ কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারা। বিশেষ করে পেসারদের ক্ষেত্রে সেটা বেশি ঘটেছে।
চাপে পড়লেই খেই হারিয়েছেন পেসাররা। ভালো করতে না পারার দায় হিসেবে এটাকে উল্লেখ করেছেন টি-টোয়েন্টির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরাম ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এশিয়া কাপে না খেলায় এই চাপের মুখোমুখি হতে হয়নি হাসানের। তবে এটা যে বাংলাদেশের ঘাটতির জায়গা, সেটা জানেন হাসান।
এ কারণে করণীয় জানালেন ২২ বছর বয়সী এই গতি তারকা। হাসান বলেন, 'যখন চাপের সময় আসে, তখন হয়তো আমরা বেশি প্যানিকড হয়ে যাই, আমাদের যে মূল স্কিল, ওটা হয়তো ভুলে যাই। এই ব্যাপারটি সত্যি বলতে আমাদের নিয়মিত চালিয়ে নিতে হবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমাদের ওই জিনিসটা কাজে লাগাতে হবে। এটা আমাদের শিখতে হবে।'
জিম্বাবুয়ে সফরের পারফরম্যান্স দিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন জানিয়ে হাসান বলেন, 'আমার সর্বশেষ যে পারফরম্যান্স দেখেছিলেন জিম্বাবুয়েতে, তাতে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে ওটাকে ধরেই হয়ত আমি থাকতে পারব দলে। এমনটাই হয়েছে। যেহেতু এখন বিশ্বকাপ দলে আছি, নিজের সেরাটাই দিতে চাই।'
২০২০ সালের মার্চে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলে অভিষেক হয় হাসানের। এরপর কয়েক দফায় চোটের কারণে বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। লাল সবুজ জার্সিতে পাঁচটি ওয়ানডে ও ৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ডানহাতি এই পেসার। ২০২০ সালের পর গত আগস্টে সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই টি-টোয়েন্টিতে ফেরেন তিনি। গতি সব সময়ই তার সেরা অস্ত্র। এবারের জিম্বাবুয়ে সফরে সুইং ও নিয়ন্ত্রণেও মুন্সিয়ানা দেখান দুই ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়া হাসান।
পেসাররা ইনজুরিতে পড়বেন, আবার ফিরে আসবেন; চক্রটা চেনা হাসানের। বাস্তবতা মেনে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি, 'ফাস্ট বোলারদের জন্য ইনজুরি জিনিসটা… মানে বন্ধুর মতো, এসে আবার চলে যায় (হাসি)। এটা নিয়ে কাজ করার মধ্যে থাকতে হবে। ফিটনেস বলুন বা বোলিং নিয়ে কাজ, সব কিছু মিলেই এটা ধারাবাহিকতার ব্যাপার। নিয়মিত আপনি যখন কাজে থাকবেন, তখন এ জিনিসটা হয়তো হবে না।'
এশিয়া কাপের দলে ছিলেন হাসান। কিন্তু অনুশীলনে গোড়ালিতে চোট পেয়ে ছিটকে যান তিনি। আপাতত তার লড়াই পুরো ফিট হয়ে ওঠা। অবশ্য ফিট হয়ে ওঠার পথেই আছেন তিনি। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বোলিং করবেন বলে জানিয়েছেন তরুণ এই পেসার। তিনি বলেন, 'চোটের কারণে বল হাতে নিইনি এখনও। ১৯ তারিখে বোলিং করব ইনশা আল্লাহ।'
২২ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে প্রস্তুতি ক্যাম্প করার পাশাপাশি আমিরাতের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ২৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে দুই-তিন দিনের বিশ্রামের পর ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে ২ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডে যাবে বাংলাদেশ। সিরিজ শেষে সেখান অস্ট্রেলিয়ায় যাবে বিশ্বকাপে অংশ নিতে।