বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের মহড়া, সুযোগ কাজে লাগালো ডাচরা
শূন্য রানেই ফিরে যেতে পারতেন স্কট এডওয়ার্ডস। কিন্তু তিন বলে নেদারল্যান্ডস অধিনায়কের তোলা দুটি ক্যাচের একটিও নিতে পারলেন না লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুবার জীবন পেয়ে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান খেললেন মহাকার্যকর এক ইনিংস।
সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের ইনিংসের গল্পটাও অনেকটা একই রকম। মেহেদী হাসান মিরাজের ভুলে জীবন পাওয়া এই ডাচ ব্যাটসম্যানও সুযোগ কাজে লাগালেন, ব্যাটিং করলেন ৪৬ ওভার পর্যন্ত। সঙ্গে ওয়েসলি বারেসির লড়াকু ইনিংস ও লেগান ভ্যান বিকের শেষের ঝড়। বারবার দিক হারিয়েও এই চার ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়লো নেদারল্যান্ডস।
শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে সব কটি উইকেটে ২২৯ রান তুলেছে ডাচরা। আরও কম রানেই তাদেরকে গুটিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্যাচ মিস ও বাজে ফিল্ডিংয়ে সেটা সম্ভব হয়নি। যে দুজনের ক্যাচ হাত ফসকে বেরিয়েছে, সেই দুজনই ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। খেলেছেন সময় উপযোগী ইনিংস।
বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দাপুটে। তিন ওভারের মধ্যেই ডাচদের দুই উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারেই ডাচ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংকে ফিরিয়ে দেন চোট কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের পায়ের ওপর করা ডেলিভারি ফ্লিক করতে গিয়ে সাকিব আল হাসানের হাতে ধরা পড়েন বিক্রমজিৎ।
পরের ওভারেই তোপ দাগেন শরিফুল, তার শিকার ম্যাক্স ও'দাউদ। তার করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ডাচ এই ওপেনার। ৪ রানেই দুই উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন অ্যাকারম্যান। চাপ কাটিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন তারা।
দুই ওভারের মধ্যে এ দুজনকে ফিরিয়ে ডাচদের আবারও চেপে ধরে বাংলাদেশ। ১৪তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের ফুল লেংথের ডেলিভারিতে শট খেলতে গিয়ে সাকিবের হাতে ধরা পড়েন ৪১ বলে ৮টি চারে ৪১ রান করা বারেসি। ১৫ রান করা অ্যাকারম্যানকে পরের ওভারে ফেরান সাকিব, এবার ক্যাচ নেন মুস্তাফিজ।
১৬তম ওভারেই এডওয়ার্ডসকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু তিন বলের মধ্যে ডাচ অধিনায়কের তোলা দুটি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন লিটন ও মুশফিক। জীবন পেয়ে বাস ডে লেডের সঙ্গে জুটি বাধেন এডওয়ার্ডস, যোগ করেন ৪৪ রান। ১৭ রান করা ডে লেডেকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন।
এরপর ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিটি পায় নেদারল্যান্ডস। ষষ্ঠ উইকেটে ১০৫ বলে ৭৮ রান যোগ করেন এডওয়ার্ডস ও এঙ্গেলব্রেখট। ৮৯ বলে ৬টি চারে ইনিংস সেরা ৬৮ রান করা এডওয়ার্ডস মুস্তাফিজের শিকারে পরিণত হয়ে থামেন। কিছুক্ষণ পরই থামেন এঙ্গেলেব্রেখট, ৬১ বলে ৩টি চারে ৩৫ রান করেন তিনি। যদিও ২৮ রান করেই ফিরতে পারতেন এঙ্গেলব্রেখট, কিন্তু তার তোলা ক্যাচ ফেলেন দেন মিরাজ।
এরপরও শেষ ৫ ওভারে বলে ৪৪ রান তোলে নেদারল্যান্ডস। এটা সম্ভব হয় ভ্যান বিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। ১৬ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রান করেন তিনি। আরিয়ান দত্ত ৬ বলে ৯ রান করেন। শেখ মেহেদি হাসানের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে ১৭ রান তোলে নেদারল্যান্ডস। দারুণ বোলিং করা মুস্তাফিজ ১০ ওভারে ৩৬ রানে ২টি উইকেট নেন। তাসকিন, শরিফুল ও শেখ মেহেদির শিকারও ২ উইকেট। তবে তাদের খরচা বেশি। সাকিব পান একটি উইকেট।