‘শত্রু’ মুজিবের বল নেটে বেশি বেশি খেলার আশায় সোহান
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পর্দা নামবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি। পরদিনই বাংলাদেশে আসবে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। এই সফরে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি খেলবে আফগানরা। যেখানে স্পিনে সফরকারীদের বড় ভরসার নাম মুজিব-উর-রহমান।
ডানহাতি এই স্পিনার বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলতে যাচ্ছেন। বুধবার ঢাকা এসে পরেরদিন চট্টগ্রামে চলে এসেছেন তিনি। করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন মুজিব। সব ঠিক থাকলে শনিবার খুলনার বিপক্ষে বরিশালের জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন তিনি।
এর আগে বরিশালের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান জানালেন, সামনের সিরিজ মাথায় রেখে নেটে মুজিবকে বেশি বেশি খেলতে চান বরিশালে থাকা জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এ ছাড়া বরিশালের চট্টগ্রাম পর্বের পরিকল্পনা, নিজের ব্যাটিং, করোনা পরবর্তী সময়ে ছন্দে ফেরার লড়াইসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কথা বলেন সোহান।
প্রশ্ন: বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের ছয়টিই চট্টগ্রামে। ২০০- এর বেশি স্কোরগুলো এখানে। এ রকম একটা ভেন্যুতে আসার পর ব্যাটিং নিয়ে কী পরিকল্পনা?
নুরুল হাসান সোহান: আসলে সত্যিকার অর্থে চট্টগ্রামের উইকেট খুব ভাল থাকে। আর দল হিসেবে যদি বলি, সর্বশেষ দুটি ম্যাচ হেরে আমরা কিছুটা ব্যাকফুটে আছি। আমরা অবশ্যই চাইব শক্তভাবে ফিরতে এবং যেহেতু এখানে উইকেট অনেক ভালো থাকবে, আমার কাছে মনে হয় বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। অবশ্যই আমরা জেতার জন্য মাঠে নামব।
প্রশ্ন: মিরপুরে তো রান হয় না, সেখানে আপনাদের এক রকম মানসিকতা থাকে। এখানে ভিন্ন উইকেট, কেমন মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামতে চান?
সোহান: আমরা শেষ দুটি ম্যাচ হেরে একটু পিছিয়ে আছি। আমার কাছে মনে হয় যে, এখান থেকে দল হিসেবে শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু উইকেট ভাল থাকে, আমার কাছে মনে হয় এখানে টি-টোয়েন্টিতে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়। অবশ্যই আমরা চেষ্টা করব যেন টিম স্পিরিট এবং একটা দল হিসেবে খেলতে পারি, যেন আমরা জেতার ছন্দে ফিরতে পারি।
প্রশ্ন: আজ নেটে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করলেন। নতুন কিছু চেষ্টা করেছেন?
সোহান: না, আসলে কোভিড হওয়ার পর থেকে ছন্দে আসাটা অনেক জরুরি। তো ওটাই আসলে চেষ্টা করছি। কারণ আমার কাছে যেটা মনে হয় যে, দল হিসেবে আমাদের খেলাটা খুব জরুরি এবং যেহেতু লেট মিডল অর্ডারে আমি ব্যাট করি, সে জন্য আমার ছন্দে আসাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য। ছন্দ ফিরে পাচ্ছি।
প্রশ্ন: একটু হতাশ মনে হয়েছে আপনাকে, ব্যাটও ছুঁড়ে মারলেন...
সোহান: যেকোনো দলের হয়ে যখন আমি খেলি, আমার কাছে সবচেয়ে বেশি জরুরি ব্যাপার থাকে দলের জন্য জয়ে অবদান রাখা। আমার কাছে ১০০ বা ৫০ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের জন্য ১০ রান বা ২০ রান কিংবা পেছন থেকে কিপিং করে বা রান সেভ করে যতটুকু জয়ে অবদান রাখা যায়, ওটাই জরুরি। সবাই আমরা ওটাই চেষ্টা করছি যেন আমাদের শতভাগ অনুশীলনে দিতে পারি এবং ম্যাচে ওটার প্রয়োগ করতে পারি।
প্রশ্ন: ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে আপনাদের দল সফল নয়। টপ অর্ডার বলা যায় ব্যর্থ। চট্টগ্রামে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হয়, এখানেই ব্যাটিং ফর্ম ফেরাতে চান আপনারা?
সোহান: আমাদের দলে আট-নয়জন ব্যাটসম্যান আছে। ব্যাটিংটাই আমাদের কাছে মূল ভরসার জায়গা। মিরপুরে আমাদের সর্বশেষ যে তিনটা ম্যাচ হয়েছে, ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে কিছু করতে পারিনি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে, এটা অনেক বড় সুযোগ যে এমন একটা উইকেটে খেলা হবে। এখান থেকে যেন আমরা আমাদের ছন্দে আসতে পারি।
প্রশ্ন: বিপিএল শেষে বাংলাদেশের সাদা বলের দুটি সিরিজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সাদা বলে যেহেতু টানা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন, এটা আসন্ন সিরিজে কতোটা কাজে লাগতে পারে?
সোহান: বিপিএল হলে প্রতি বছরই কিন্তু বাইরের অনেক খেলোয়াড় এসে খেলছে এবং আমরা একসাথে খেলছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যে হাইপ, নিবেদন থাকে, সেটা বিপিএলে পাওয়া যায়। এটা আমাদের কাছে অবশ্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এটার পরই ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ, তো এখান থেকেই আমাদের যতটুকু সম্ভব আত্মবিশ্বাস নিয়ে নেওয়া যায়। সেটা করে যদি আমরা যেতে পারি, তাহলে আফগানিস্তান সিরিজ আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে।
প্রশ্ন: মুজিব-উর-রহমান ফরচুন বরিশালে আপনাদের সঙ্গে খেলবেন। নেটে তার বল খেলার ব্যাপারে বিশেষ নজর থাকবে কিনা?
সোহান: অবশ্যই চাইব যেন নেটে বেশি বেশি খেলা যায় মুজিবকে। তাহলে হয়তো আমাদের ব্যাটসম্যান যারা আছে, এর পরের সিরিজে যারা থাকবে, তাদের জন্য অনেকটা সহজ হবে।