লিটন-মুশফিকের ব্যাটে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ
শুরুটা ভালো হলো না। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফিরলেন কিছু না করেই। সাকিব আল হাসানও পারলেন না বড় ইনিংস খেলতে। এরপরও দলকে কোনো চাপ বুঝতে দেননি আসাধারণ ব্যাটিং করা লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম। লিটনের সেঞ্চুরি ও মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বড় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৩০৬ রান তুলেছে, যা এই মাঠে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। অনিন্দ সুন্দর ব্যাটিংয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া লিটন তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। কাছে গিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি মুশফিক। বাংলাদেশের স্কোর আরেকটি বড় হতে পারতো, কিন্তু শেষ চার ওভারে মাত্র ২২ রান তোলায় তা হয়নি।
শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। যদিও প্রথম ওয়ানডের মতো এই ম্যাচে অগোছালো মনে হয়নি স্বাগতিকদের। লিটন কুমার দাস অতি সাবধানী ছিলেন, তামিমকে বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিল। উল্টো আফগানরা এলোমেলো ঠিল। ৩ ওভারে বাংলাদেশের তোলা ২০ রানের মধ্যে তামিম কেবল ৮ রান করেন, লিটন তখনও রানের খাতা খোলেননি। ২০ রানের মধ্যে ১২ রানই অতিরিক্ত দেয় আফগানিস্তান।
এরপরও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ৩৮ রানে ফজল হক ফারকীর বলে এলবিডব্লিউ হন তামিম। প্রথম ওয়ানতেও একইভাবে আফগান এই পেসারের বলে এলবিডব্লিউন হন তিনি। এদিন ২৪ বলে ২টি চারে ১২ রান করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
লিটনের সঙ্গে যোগ দেওয়া সাকিব আল হাসানও ধীর স্থির মেজাজে খেলতে থাকেন। তাতে চাপ সামলে নেয় বাংলাদেশ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি সাকিব। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার ৩৬ বলে ২টি চারে ২০ রান করে আউট হন। এরপর লিটনের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক, শুরু হয় তাদের ব্যাটিং শো। যা চলে ৪৬.২ ওভার পর্যন্ত।
অসাধারণ ব্যাটিংয়ে লিটন-মুশফিক ২০২ রানের জুটি গড়েন। যা তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। এই জুটি গড়ার মাঝে দুজনই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৫০ পেরিয়ে সেঞ্চুরিও তুলে নেন লিটন। ওয়ানডেতে এটা তার পঞ্চম সেঞ্চুরি।
হাফ সেঞ্চুরি করলেই সেটাকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়াটা যেন নিয়ম বানিয়ে ফেলেছেন লিটন। সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুনে ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। এরপর তার কোনো হাফ সেঞ্চুরিই অল্পতে থামেনি, প্রতিটা ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছেন লিটন। এ নিয়ে টানা চারটি হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করলেন বাংলাদেশ দলের অন্যতম এই ব্যাটিং স্তম্ভ।
শেষ পর্যন্ত ১৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৩৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন লিটন। ওয়ানডেতে এটা তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। তবে এই মাঠে এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। লিটনের বিদায়ের পরের বলে থামেন মুশফিকও। লিটনের মতো তিনিও আফগান পেসার ফরিদ আহমেদের শিকারে পরিণত হন। এর আগে ৯৩ বলে ৯টি চারে ৮৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন মুশফিক, ওয়ানডেতে এটা তার ৪১তম হাফ সেঞ্চুরি।
লিটন-মুশফিকের বিদায়ে রান তোলার গতি কমে যায় বাংলাদেশের। শেষ দিকে রান তুলতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আফিফ ৯ বলে ৬ ও মাহমুদউল্লাহ ১৩ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান লিটনের, ১৩৬। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৬ রান মুশফিকের। তৃতীয় সর্বোচ্চ রান আসে অতিরিক্ত থেকে, আফগানরা এদিন ৩৩ রান অতিরিক্ত দেয়। সফরকারী দলটির পক্ষে ফরিদ আহমেদ ২টি এবং ফজল হক ও রশিদ খান একটি করে উইকেট নেন।