বোলার আফিফের বিরল কীর্তি
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে কীর্তি গড়েছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। খাদের কিনারে চলে যাওয়া দলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ৯৩ রানের ইনিংস খেলার পথে সপ্তম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে গড়েন রেকর্ড ১৭৪ রানের জুটি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে অবদান রাখার তেমন সুযোগ মেলেনি আফিফের। এবার বল হাতে এমন কীর্তি গড়লেন তিনি, যা নেই আর কোনো বাংলাদেশি বোলারের।
ওয়ানডে ক্রিকেটে মাত্র একটি বল করেই উইকেট নেওয়ার বিরল কীর্তি বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের নেই। শুক্রবার জট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এটাই করে দেখিয়েছেন আফিফ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের শেষ ব্যাটসম্যান ফজল হক ফারুকীকে বোল্ড করে বিরল রেকর্ডে নাম তোলেন তিনি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটা যেমন বিরল, তেমনি ৫১ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে ৪ হাজার ৩৫৮তম ম্যাচে এটি মাত্র অষ্টম ঘটনা।
২০১৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) মাত্র ১৭ বছর বয়সে রাজশাহী কিংসের মূল দলে জায়গা পান আফিফ। তবে দলটিতে তার শুরুটা হয় নেট বোলার হিসেবে। নেট বোলার থেকে মূল একাদশে, এরপর বিপিএল অভিষেকেই তার বাজিমাত। ডান হাতের অফ স্পিনে জাদু ছড়িয়ে ২১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দেন আফিফ।
আগ্রহ বাড়ে তাকে ঘিরে, যদিও দেখা যায় তিনি মূলত বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান! ২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা আফিফ খেলেন ব্যাটসম্যান হিসেবেই। দলের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে করেন অফ স্পিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তার বোলিং সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা সেভাবে দেখায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।
শুক্রবার আফগানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হঠাৎই আফিফকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ত তামিম ইকবাল। প্রতিপক্ষের ৯ উইকেট চলে যাওয়ার পর ৪৬তম ওভারটি করতে যান তিনি। প্রথম বলেই ফজলের স্টাম্প উপড়ে নেন তিনি। আর তাতে রেকর্ড বইয়ে উঠে যায় তার নাম।
ওয়ানডের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৬৩ জন বোলার একটি করে বল করেছেন। এর মধ্যে উইকেট নিতে পেরেছেন কেবল ৮ জন, আফিফ এর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশি। আগের ৮ ওয়ানডেতে ১৮ বল করা আফিফ পেয়েছিলেন একটি উইকেট। ওয়ানডেতে তার উইকেট এখন ২টি। ৩৯ টি-টোয়েন্টিতে ২১ ওভার বোলিং করা ডানহাতি এই অফ স্পিনারের নামের পাশে আছে ৭ উইকেট।
আফিফের বিরল কীর্তির তালিকায় প্রথম নামটি ক্লাইভ লয়েডের। ১৯৮৫ সালে ক্যারিবীয় এই কিংবদন্তি ব্রিসবেনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক বল করেই উইকেট নেন। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যান জারসভেল্ড বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০২ সালে কিম্বার্লিতে, ভারতের দিনেশ মঙ্গিয়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে, শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান ২০০৫ সালে ডাম্বুলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ২০০৭ সালে কিংস্টনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ, ২০০৮ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়াসুরিয়া এবং ২০১৭ সালে অ্যান্টিগায় ভারতের কেদার যাদব ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই কীর্তিতে নাম লেখান।