বিলাতী টিভির বাংলাকান্ত মণি কনি হক
টানা প্রায় এক যুগ কনি হক 'ব্লু পিটার' উপস্থাপনা করে রেকর্ড গড়েছেন। ব্রিটিশ শিশুদের জন্য বিবিসির এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। ২০১০ সালে কনি আইটিভিটু এর 'দি এক্স ফ্যাক্টর'ও উপস্থাপন করেছেন। তিনি একইসঙ্গে টিভি ও রেডিও প্রেজেন্টার, চিত্রনাট্য লেখক এবং শিশুতোষগ্রন্থ লেখক। লন্ডনে তার জন্ম ১৯৭৫ সালে।
নামধাম ইত্যাদি
পুরো নাম কনক আশা হক। তার বাবা-মা বাংলাদেশ থেকে বিলেত যান ষাটের দশকে। বড় দুই বোনের সঙ্গে কনক বেড়ে ওঠেন লন্ডনের ইলিং ডিস্ট্রিক্টে। লেবার পার্টির রুপা হক (২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি এমপি হয়েছিলেন) তার বড় বোন। এ লেভেলে কনক পড়েছেন রসায়ন, গণিত আর পদার্থবিজ্ঞান। কেম্ব্রিজের রবিনসন কলেজে অর্থনীতিও পড়েছেন। কনক ন্যাশনাল ইয়ুথ মিউজিক থিয়েটারেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন । ১৯৮৯ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে, তিনি ব্লু পিটারে একক গান করেছেন। পরের বছরই তিনি হলিউডের অভিনেতা জুড লয়ের সঙ্গে একটি মঞ্চনাটকে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। চ্যানেল ফাইভের জন্য কনি 'জু ডেইজ' এবং চ্যানেল ফোরের জন্য 'রেড বুল এয়ার রেস' উপস্থাপন করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি গিনেস ওয়ার্লড রেকর্ডস স্ম্যাশডও উপস্থাপন করেন। একই বছর তিনি ডানকান জেমসের সঙ্গে ডিজনী চ্যানেলের জন্য হান্না-ওকে উপস্থাপন করেন। ওই বছরই তিনি বেস্ট রাইজিং স্টার স্ক্রিনপ্লে অ্যানজেল অ্যাওয়ার্ড জেতেন মোনাকো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে। ২০১১ সালের 'ব্ল্যাক মিরর' এবং ২০১২ সালের 'আ টাচ অব ক্লদ' নামের টিভি সিরিজে অংশ নিয়েও খ্যাতি পেয়েছেন কনি।
২০১৯ সালে কনির শিশুতোষ গ্রন্থ 'কুকি অ্যান্ড দ্য মোস্ট অ্যানয়িং বয় ইন দ্য ওয়ার্লড' প্রকাশিত হয়। ২০২০ সালে বইটির দ্বিতীয় খণ্ড আর ওই বছরেরই আগস্টে তৃতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয়।
মানুষের পাশে
বিবিসি ওয়ানের ফান্ডরেইজিং শোতে তিনি অংশ নিয়েছেন। উগান্ডায় গিয়ে থেকেছেন এতিম শিশুদের সঙ্গে। গিয়েছিলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানেও। পোলিও নির্মূল অভিযানের অংশ হিসাবে ভারতে গিয়েছেন। ব্রিটিশ রেড ক্রসের শুভেচ্ছাদূত হিসাবে তিনি 'ইফ আই হ্যাড এইচআইভি, উড ইউ কিস মি?' শিরোনামের চলচ্চিত্রে অংশ নেন। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক গেমসেরও তিনি শুভেচ্ছাদূত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এ বছর মানে ২০২২ সালে তিনি মান্ডি (বিবিসির টিভি কমেডি) সিরিজে অংশ নিচ্ছেন। কনির বার্ষিক আয় ধরা হচ্ছে ৮ মিলিয়ন ডলার।
মিরর সংবাদমাধ্যমে কনি বলেছেন, 'আমি ভোগবাদী নই। আমি কিছুই কিনি না। আমি অনেকখানিই অ্যানালগ। আমার আমাজন অ্যাকাউন্ট নেই, ফেসবুক ব্যবহার করি না। আমি পুরোনো দিনের মানুষে। আমি ছোটবেলা থেকেই মা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। আমি ভাবতাম, দুই সন্তান নিয়ে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি, সন্তান তিনটি হলে রাজত্ব তৈরি হয় যেমন দুয়ে হয় কোম্পানী আর তিনে জমে ভিড়।'
লেখক চার্লি ব্রুকারকে বিয়ে করেছেন কনি। তাদের দুই সন্তান।