কোক, ভাড়াটে গাড়ি, পেট্রল পাম্প বিতর্ক: ঋষি সুনাকের কিছু বিব্রতকর মুহূর্ত!
মাত্র ৪২ বছর বয়সে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে ইতোমধ্যেই সবাইকে চমকে দিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদ ঋষি সুনাক। যদিও নিজেকে কখনোই সাধারণ মানুষের কাতারে ফেলেননি তিনি; কিন্তু প্রাডার জুতো পায়ে, বেসপোক স্যুট পরা নবনির্বাচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এখন ঠিকই জনগণের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার বেলায় দুবার ভাববেন।
তবে তা সত্ত্বেও, 'গোল্ডম্যান সাকস'র ব্যাংকার ও প্রাক্তন চ্যান্সেলরের গত সাত বছরের রাজনৈতিক জীবন ভুল-ত্রুটিমুক্ত ছিল না। বিভিন্ন সময়ে নানা বিব্রতকর পরিস্থিতি ও বিতর্কের মুখে পড়েছেন ঋষি সুনাকও।
ধনীদেরকে দিতে গরিবদের থেকে সাহায্য নেওয়া!
ফাঁস হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ঋষি সুনাক টিউনব্রিজ ওয়েলসে কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের কাছে গর্বভরে বলছেন যে তিনি 'সুবিধাবঞ্চিত শহুরে এলাকাগুলো'র জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বড়-সমৃদ্ধ শহরগুলোকে সাহায্য করেছেন।
নিউ স্টেটসম্যানের সেই ফুটেজে ঋষি সুনাককে বলতে শোনা যায়, "আমরা লেবার পার্টির থেকে কিছু ফর্মুলা পেয়েছি, যেখানে কিনা তহবিল সব অর্থ সুবিধাবঞ্চিত শহুরে এলাকার পেছনে খরচ করা হয়।" কিন্তু সুনাক গর্বভরে জানিয়েছিলেন যে তিনি চ্যান্সেলর হয়ে আসার পর এই নীতি পাল্টে দিয়েছেন।
কোকে আসক্তি!
একবার দুজন স্কুলছাত্রের সাথে কথা বলার সময় ঋষি সুনাক বলেছিলেন, "আমি একজন কোকে আসক্ত মানুষ!" যদিও কোনো বিতর্ক তৈরি হওয়ার আগেই সুনাক জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই আসক্তির মানে হলো কোকা-কোলা খেতে ভীষণ পছন্দ করেন তিনি! সুনাক এও জানিয়েছিলেন যে তার সবচেয়ে প্রিয় হলো মেক্সিকান কোক।
পেট্রল পাম্প বিতর্ক
পেট্রলের দাম কমানোর জন্য একটি পিআর স্টান্টের মধ্যে নিজেকে কম বিত্তশালী মানুষ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন ঋষি সুনাক। পরবর্তীতে জানা যায়, ক্যামেরার সামনে যেই লাল কিয়া গাড়িটিতে তিনি পেট্রল ভরছিলেন, সেটি আসলে সেইন্সবারি সার্ভিস স্টেশনের এক কর্মচারীর গাড়ি ছিল!
পরে বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে ঋষি সুনাক বলেন, "সবচেয়ে বিব্রতকর ব্যাপার ছিল এই যে, যেই গাড়িতে পেট্রল নেওয়ার জন্য আমি এত কষ্ট করছিলাম সেটি আসলে আমার গাড়ি ছিল না।"
একই ফটো অপ-এ ঋষি সুনাককে ব্যাংক কার্ড স্ক্যানিং করে কোকা-কোলার বোতলের দাম দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে পরে তিনি বলেন, কন্টাক্টবিহীন কার্ড কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা কারো কাছ থেকে শিখতে হবে তার।
শ্রমিক শ্রেণীর কোনো বন্ধু নেই তার
২০০১ সালে 'মিডল ক্লাস: দেয়ার রাইজ অ্যান্ড স্প্রল' নামে বিবিসির একটি প্রামাণ্যচিত্রে তরুণ ঋষি সুনাককে বলতে শোনা যায় তার কত অভিজাত বন্ধু রয়েছে এবং কিভাবে তিনি পড়াশোনার ক্ষেত্রে বরাবরই সুবিধা পেয়ে এসেছেন।
"আমার অনেক অভিজাত, সামাজিকভাবে উচু শ্রেণীর বন্ধু রয়েছে, আমার শ্রমিক শ্রেণীর বন্ধু রয়েছে... এটুকু বলেই তিনি থেমে গিয়ে বলেন, "না, আসলে শ্রমিক শ্রেণীর বন্ধু নেই।"
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান