এমআইটি বনাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কিউএস ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে কে কোথায়
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারলি সায়মন্ডস (কিউএস) প্রকাশিত শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তালিকাতেও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো অবস্থানে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু কেন? যেসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়, তার দিকে নজর দিলেই এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
৮০১ থেকে ১০০০তম'র মধ্যে অবস্থিত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অন্যদের তুলনায় কতদূর পিছিয়ে আছে তা নির্ণয় করতে সাহায্য করবে এই তথ্য।
টানা দশ বছর ধরে তালিকার শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। অ্যাকাডেমিক মর্যাদার মানদণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়টি পূর্ণ ১০০ স্কোরই অর্জন করে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অ্যাকাডেমিক মর্যাদায় সর্বোচ্চ ১৭.৯ স্কোর নিয়ে শীর্ষে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বুয়েটের স্কোর ১৩.১ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর ১৬.৮।
এমআইটি বনাম বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়: তুলনামূলক পার্থক্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত র্যাংকিংয়ের জন্য অ্যাকাডেমিক মর্যাদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূচকে এই মানদণ্ডের মূল্য সবচেয়ে বেশি। কিউএস পরিচালিত অ্যাকাডেমিক জরিপের মাধ্যমে মর্যাদা বা রেপুটেশন স্কোর নির্ধারণ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ও গবেষণার গুণগত মানের বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় সংশ্লিষ্ট এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে এই মান নির্ণয় করে কিউএস।
দ্বিতীয় যে বিষয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তা হলো ফ্যাকাল্টি প্রতি সাইটেশন বা তথ্যসূত্র প্রদান। এই মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায় কোনো অবদানই রাখতে পারেনি। এমনকি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এই র্যাংকে একেবারেই কোনো স্কোর তুলতে ব্যর্থ হয়।
কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ বছরের মেয়াদকালে পরিচালিত গবেষণাকর্ম অন্যান্য গবেষণাকর্মে মোট যতবার উদ্ধৃত হয়েছে, তাকে প্রতিষ্ঠানটির মোট ফ্যাকাল্টি সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে এই মান নির্ণয় করা হয়। এছাড়া, বিভিন্ন অনুষদে গবেষণা প্রকাশনার ধারা অনুসারে এই মানদণ্ড বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
এই বিভাগে, বাংলাদেশের সবচেয়ে মযার্দাপূর্ণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর মাত্র ২.৮। অন্যদিকে, বুয়েটের স্কোর সর্বোচ্চ ৭.৮।
আন্তর্জাতিক ফ্যাকাল্টি অনুপাত অনুসারে, এমআইটির স্কোর ১০০। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্কোর এই বিভাগে মাত্র ১.১। অন্যদিকে, ব্র্যাক বা বুয়েট কোনো পয়েন্ট অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তবে পুরোপুরি হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নিয়োগকারী মর্যাদা বা এমপ্লয়ার রেপুটেশন বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েট- উভয় প্রতিষ্ঠানের স্কোর ২৯.৯। অবশ্য এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে টপকে ৪৭.৯ স্কোর নিয়ে শীর্ষে আছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
এমআইটি বনাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কিউএস বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং মানদণ্ডে মুখোমুখি অবস্থান
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সার্বিকভাবে সবচেয়ে কম স্কোর অর্জন করলেও ফ্যাকাল্টি-শিক্ষার্থী অনুপাতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এগিয়ে আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের ক্ষেত্রে এই মান যথাক্রমে ১৪.০ ও ১৯.৬। অন্যদিকে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর ৩৯.২। এই বিভাগে এমআইটির মান সর্বোচ্চ ১০০।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর অনুপাতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কোনো স্কোর অর্জন করেনি। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট- উভয় প্রতিষ্ঠানের স্কোর ১.১।