দেড় মাসেও সরকারি ত্রাণ পাননি, খুলনায় মোটর শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
খুলনায় ত্রাণের দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ করেছে নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও মোটর শ্রমিকরা।
বুধবার দুপুরে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) শতাধিক নারী-পুরুষ নগরীতে বিক্ষোভ করে। তারা খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে এসে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পারভীন আক্তার, জাহানারা বেগম ও শান্তা বেগমসহ অন্যরা অভিযোগ করেন, করোনার কারণে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। প্রথম দিকে কাউন্সিলর সামসুজ্জামান মিয়া স্বপন সামান্য কিছু খাদ্য সামগ্রী দেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই তারা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করতে চান। কিন্তু কাউন্সিলরের লোকজন বাধা ও হুমকি দিচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছেন।
তবে, স্থানীয় ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুজ্জামান মিয়া স্বপন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম পর্যায়ে সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে ৫ হাজার ২০০ পরিবারকে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বার সহযোগিতা পেয়েছেন আরো ২১৯ জন। এ চক্র ত্রাণ নিয়ে 'বাণিজ্য করার' চেষ্টা করছে। সেটি বাধা দেয়ায় কিছু বহিরাগত ব্যক্তি পরিবেশ নষ্ট করছে।
তিনি বলেন, শান্তা ও মনির নামে দুই ব্যক্তি সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ত্রাণ দেয়ার কথা বলে টাকা আদায় করছে। সেটি বাধা দেয়া দেয়ায় বহিরগত মানুষ নিয়ে তারা বিশৃঙ্খলা করছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হবে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে মানুষের পাশে আছি।
এদিকে ত্রাণের দাবিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন (১১১৪) খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলতলা বাস স্ট্যান্ড অবরোধ করে অবরোধ বিক্ষোভ করে।
এ সময় ফুলতলা শাখা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওয়াহিদ মুরাদ পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সনজিৎ বসুসহ অন্যান্য নেতারা অভিযোগ করে বলেন, করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় মাস ধরে কর্মহীন হয়ে আছে ফুলতলা এলাকার বাস, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলার, ইজিবাইকের সহস্রাধিক শ্রমিক। ফলে এসব অসহায় মোটর শ্রমিক পরিবার অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সরকারি ত্রাণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দফায় দফায় শ্রমিকদের পরিচয়পত্র, নাগরিকত্ব সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিলেও আজ পর্যন্ত তাদের কোনো ত্রাণ বা খাদ্য সহায়তা দেয়নি।
অবরোধকালে তারা হুমকি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে সরকারি ত্রাণ সহায়তা না পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরণ সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হবে।
অবরোধ চলাকালে ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন সুলতানা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসে ত্রাণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।