পরিবেশবান্ধব ব্লক: সবুজ বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা
অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য বর্তমানে পরিবেশবান্ধব ব্লক বা বিকল্প ইটের (অলটারনেটিভ ব্রিকস- এবি) মতো ভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে বিকল্প ইটগুলোর জন্য দ্রুত বাজারও গড়ে তোলা হচ্ছে দেশে।
বাজারে বিভিন্ন বিকল্প নির্মাণ সামগ্রী রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- কংক্রিট ব্লক, হলো ব্লক, সেলুলার ব্লক, লিন্টেল, থার্মাল ব্লক, কম্প্রেসড স্ট্যাবিলাইজড আর্থ ব্লক, ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক, স্যান্ড লাইম, অটোক্লেভড এরেটেড কংক্রিট ইত্যাদি।
দেশের ভিতর বছরে নতুন বাড়ির চাহিদা চার লাখেরও বেশি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়ি নির্মাণে ঐতিহ্যবাহী পোড়া ইট ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে দেশের যততত্র বর্তমানে ইটভাটা গজিয়ে উঠেছে।
কিন্তু এসব ইটভাটার বেশিরভাগই আশেপাশের কৃষিজমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে যা খাদ্য ও ফসলের উৎপাদনের জন্য বিরাট হুমকি। অথচ খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টির উন্নয়ন ও কৃষির টেকসই উন্নয়ন জাতিসংঘের 'সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি)' বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার একটি। বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এ লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হবে।
ইটভাটাগুলোর দৌরাত্ম্য কমাতেই ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয় দেশে। পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এইচবিআরআই ) প্রচলিত পোড়ামাটির ইটের টেকসই বিকল্প অনুসন্ধানের গবেষণা করছে।
এতদিনের ঐতিহ্যবাহী পোড়া ইটের ব্যবহার হ্রাসকল্পে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের জন্য 'গ্রীন বিল্ডিং প্র্যাকটিস' বা সবুজায়ন নির্মাণে গতিবেগ দিয়েছে।
বর্তমানে ১৭টিরও বেশি ব্লক উৎপাদনকারী কারখানা বিকল্প নির্মাণ সামগ্রীর বার্ষিক চাহিদা মেটাতে কাজ করছে; তবে চাহিদার তুলনায় এটি অপ্রতুল।
ইটভাটার মালিক এবং ব্লক উৎপাদনকারী কারখানা নির্মাণের নব্য উদ্যোক্তা- উভয়ের জন্যই প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সহজ ঋণের মত বেশ কয়েকটি প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার।