বিদেশিরাই বছরে বেতন বাবদ নিয়ে যান ৬ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশে প্রতি ৩ জনে ১ জন ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী। আর বছরে ২.২ মিলিয়ন তরুণ-তরুণী শ্রমশক্তিতে যুক্ত হচ্ছেন।
রোববার রাজধানীতে আয়োজিত এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
তবে শ্রমশক্তিতে যুক্ত হতে ইচ্ছুক এই জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই বেকার রয়ে যাচ্ছেন নয়তো কম বেতনের কাজে যুক্ত হচ্ছেন। এর কারণ, এই জনশক্তির দক্ষতার ঘাটতি।
কর্মশালায় বক্তারা আরও জানান, আধা-দক্ষ বা উচ্চ-দক্ষতার বিদেশিরা বছরে বেতন বাবদ ৬ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) নামের একটি ইনস্টিটিউট ঢাকার এক হোটেলে ‘দক্ষতা উন্নয়নের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে।
দেশের বিভিন্ন খাতের শ্রমশক্তির মধ্যেকার বেতন-বৈষম্যের বিষয়টি চিহ্নিতকরণ এবং বিভিন্ন শিল্পের জন্য দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে সঠিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কর্মশালাটির আয়োজন হয়।
কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘দক্ষ শ্রমশক্তিই যথেষ্ট নয়। বরং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে হলে দরকার যথাযথ কর্মপরিবেশ।’
সম্প্রতি জাপানে দক্ষ শ্রমশক্তি পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনেক শ্রমিক নিজেদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। কিন্তু সমন্বয়হীনতার ফলে সুযোগটি এখনও অব্যবহৃত রয়ে গেছে।’
তৈরি পোশাক শিল্পে মধ্যম-পর্যায়ের পদগুলোতে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অথচ এ শিল্পের বয়স এখন তিন দশক পেরিয়ে গেছে। বিষয়টির উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের (জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ) যুগে বাস করেও দক্ষ জনশক্তির অভাবে ডিভিডেন্ড আমাদের নাগালে আসছে না।’
প্রসঙ্গত, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ হল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সেই সম্ভাবনা যা জনসংখ্যার বয়স-কাঠামোর পরিবর্তন থেকে পাবার সুযোগ তৈরি করে। মূলত কর্মক্ষম বয়সের জনগোষ্ঠী (১৫-৬৪) নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর (১৪ বা তার কম এবং ৬৫ ঊর্ধ্ব) চেয়ে বৃহৎ হলে, সেই অর্থনীতিতে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা এবং এনএসডিএ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক হোসেইন।