মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য অবসানের দাবি
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেয়ার পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ করেছে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের একটি অংশ। সব শ্রমবাজারে সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য সমান সুযোগ রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।
বায়রা সিন্ডিকেট নির্মূল ঐক্যজোটের ব্যানারে আজ রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
একই দাবিতে আগামী সোমবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন করবে তারা।
বায়রা সিন্ডিকেট নির্মূল ঐক্যজোট-এর সদস্য সচিব টিপু সুলতান বলেন, ''বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) ১২০০ সদস্যের অধিকাংশকে বঞ্চিত করে, মাত্র ২৫টি এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।"
জনশক্তি রপ্তানীকারকরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে সম্পাদিত জিটুজি প্লাস চুক্তিতে মালয়েশিয়া সরকার ঘোষণা করেছিল, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখ করে ৫ বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক নেওয়া হবে। জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে, জনশক্তি রপ্তানির দায়িত্ব দেওয়া হয় মাত্র ১০টি এজেন্সিকে।
এব্যাপারে সদ্য-বিদায় নেওয়া মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান- দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "এটা ছিলো জনশক্তি রপ্তানির ইতিহাসে এক জঘন্যতম ষড়যন্ত্র। ১০ এজেন্সি নিয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শ্রমিক রপ্তানি হলেই শ্রমিকদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করা যাবে, অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, অল্প-সময়ে অধিক সংখ্যক শ্রমিক রপ্তানি করা যাবে-এ রকম নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা, অনৈতিক লেনদেন ও রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে গঠিত সিন্ডিকেট পুরো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।"
"শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার জন্যে বাংলাদেশ সরকার মালইয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে একটি প্রটোকলে স্বাক্ষর করে। প্রটোকলটির আওতায় আমরা সকল রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য সমান ব্যবসার সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানাই," তিনি বলছিলেন।
"তবে আমরা জানতে পেরেছি, আগের সেই সিন্ডিকেট রপ্তানি বাজার ফের সচল হতে চলার কারণে তৎপর হয়ে উঠেছে। একারণেই, অন্য সকল এজেন্সি মালিকেরা উদ্বিগ্ন," তিনি যোগ করেন।
সপ্তাহে খানেক আগে এক জনশক্তি রপ্তানিকারক জানান, "২০১৭-১৮ সালে মালয়েশিয়া যেতে জনপ্রতি খরচ হতো ৪ লাখ টাকা, ২০০৯ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র দেড় লাখ টাকা। চুক্তি অনুসারে এখন অভিবাসনের খরচ মাত্র ৩৭ হাজার টাকা হওয়ার কথা, কিন্তু ওই সিন্ডিকেটের কারণে খরচের পরিমাণ আরও বেড়েছে।"
মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ৮ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি সিন্ডিকেটের একচেটিয়া তৎপরতায় অভিভাসনের খরচ অত্যন্ত বেশি হয়ে যাওয়ার অভিযোগে দেশটি বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর, গেল বছরের অক্টোবরে ফের বাংলাদেশি থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিতে রাজি হয় মালয়েশিয়া।