লকডাউনের প্রথম দিনেই সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী আগামী সাত দিনের লকডাউন শুরু হলো।
এই লকডাউন কার্যকর থাকবে আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত।
তবে লকডাউনের প্রথম দিনেই রাজধানীতে বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
লকডাউন চলাকালীন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে।ফলে সোমবার সকালে, লকডাউনের প্রথম দিনে অফিসগামীদের রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং প্রাইভেট কারে যাতায়াত করতে দেখা যায়।
কর্মস্থলে কর্মীদের উপস্থিতি সীমিত করার নির্দেশ থাকলেও অনেক অফিসই সে নির্দেশনা মানে নি। ফলে পরিবহন সংকট থাকা সত্ত্বেও অনেককেই অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এছাড়া, রাজধানীর কয়েকটি মোড়ে যানজটের খবর পাওয়া গেছে।
লকডাউনে জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। সন্ধ্যা ৬:০০টা থেকে ভোর ৬:০০টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে না বেরুনোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার
এছাড়া আরও যেসব নির্দেশনা জারি করা হয়েছে-
- সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/ বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না;
- আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/ জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে;
- সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প কারখানার শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্টান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনা আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ কর্তৃক শিল্প-কারখানা এলাকায় নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে;
- সন্ধ্যা ৬:০০টা থেকে ভোর ৬:০০টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা, সেবা, মৃতদেহ দাফন /সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না;
- খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/ সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না;
- শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানসমূহ বন্ধ থাকবে। তবে দোকানসমূহ পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা স্বশরীরে যেতে পারবে না।
- কাঁচাবাজার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮:০০টা থেকে বিকাল ৪:০০টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/ স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে;
- ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে;
- সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে;
- সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে; এবং
- এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।