হঠাৎ জোয়ারে ভেসে গেছে রাস্তা, নববধূকে কোলে নিয়ে পার হলেন বর
মেঘনা নদীর প্রবল জোয়ারের চাপে ভেঙ্গে যায় বরযাত্রা পারাপারের রাস্তা। সে কারণে নতুন বৌ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিপাকে পড়েন বর। পারাপারের উপায় না পেয়ে নতুন বৌকে প্রথমে ভাঙা রাস্তা পার করতে সাহায্য করেন বরের বাবা। বাকি পথ নববধূকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফেরেন বর মোঃ রমিজ।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (২৪ জুলাই) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার চর মার্টিন গ্রামের মোঃ হারুনের ছেলের সাথে চর কালকিনি গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে জান্নাত বেগমের বিয়ের দিন ধার্য ছিল শুক্রবার। অনুষ্ঠান শেষে বরযাত্রীরা নতুন বৌ নিয়ে রওয়ানা হয়। কিন্ত বরের বাড়ি পৌঁছার আগেই মেঘনা নদীর প্রবল জোয়ারে ভেঙ্গে যায় বরযাত্রী পারাপারের রাস্তাটির দু'টি জায়গা। এসময় বরযাত্রীরা ভাঙ্গা জায়গাগুলোতে নতুন বৌকে কোলে নিয়ে পার করেন। কিন্ত পথের বাকি অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে বর নিজেই নতুন বৌকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
বরের বাবা মো: হারুন জানান, 'বৌ নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখি আমার বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের'।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীর হঠাৎ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, রামগতি এবং রায়পুর উপজেলার নদীপাড়ের এলাকা পানির নিচে ডুবে গেছে। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৭ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার, শনিবার পরপর ২ দিনই এমন ঘটনা ঘটেছে। কমলনগর উপজেলার অন্তত ৫টি সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি চরাঞ্চলের বহু ফসলের মাঠ, ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের ডুবে গেছে।
কমলনগরে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়ন, সাহেবের হাট ইউনিয়ন, চর মার্টিন ইউনিয়ন, চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন, চর ফলকন ইউনিয়ন ও পাটারির হাট ইউনিয়নের মেঘনা উপকূলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
অন্যদিকে রামগতি উপজেলার বালুর চর, চর আলেকজান্ডার, সুজনগ্রাম, গাবতলী, চর আলগী, চর গোঁসাই, চর রমিজ, বড়খেরী, চরগাজী এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
রামগতি উপজেলার দ্বীপ চর আবদুল্লাহর অধিবাসী মোঃ আলাউদ্দিন জানান, গত ২ বছর থেকে প্রতি পূর্নিমা ও অমাবস্যার জোয়ারে চর আবদুল্লা ইউনিয়নের তেলির চর, উত্তর চর আবদুল্লাহ, চর গাসিয়া ও চর মোজ্জামেলসহ বহু গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।