রাজধানীর সড়কে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ, গণপরিবহন সংকট চরমে
ঈদ উল আযহায় শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফিরতে শনিবারও (৯ জুলাই) ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ। গতকাল পর্যন্ত যারা বাড়ি যেতে পারেননি, তারা আজ সকাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে আজও যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে, যানবাহনের চাপও রয়েছে। কোথাও কোথাও যানজট দেখা দিচ্ছে।
তবে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহন তুলনামূলক কম। তাই বাসে জায়গা না পেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজি, রিকশা কিংবা মটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। গুনতে হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের থেকে ৩ থেকে ৪ গুণ ভাড়া।
এদিকে ঢাকায় নিয়মিত চলাচল করা অধিকাংশ বাস রাজধানীর বাইরে যাত্রী বহন করে নিয়ে যাওয়ায় ঢাকার ভেতরে চলাচলের জন্য যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থেকেও উঠতে পারছেন না বাসগুলোতে।
রাজধানীর মিরপুর, শ্যামলী, বাড্ডা, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, মগবাজার, শাহবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিলে ঘুরে এবং বেশ কয়েকটি স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাস্তায় গণপরিবহনের সংকট চরমে।
বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, গণপরিবহনগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় দাঁড়ানোর জায়গাও মিলছে না অনেক গাড়িতে। বিকল্প বাহন হিসেবে সিএনজি এবং রিকশায় করে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন তারা।
মিরপুর থেকে সিএনজি অটোরিকশায় গুলিস্তানে আসা সাব্বির হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বাসে উঠতে না পেরে ৮০০ টাকায় সিএনজি ভাড়া করে এসেছি। এখন বরিশালের গাড়িতে করে ঢাকা ছাড়বো।"
ঈদের সময়টায় পরিবহন সংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সংশ্লিষ্টদের এদিকে নজর দেওয়ার ও অনুরোধ জানান তিনি।
বরিশালে রওনা হওয়া আজম বলেন, "সকাল ৭টায় টঙ্গী থেকে প্রভাতী বনশ্রী গাড়িতে উঠতে পারলেও গুলিস্তান পর্যন্ত দাঁড়িয়েই আসতে হয়েছে। ষাট-সত্তর টাকার ভাড়া দিতে হয়েছে ২০০ টাকা।"
ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও গণপরিবহনে আসতে পেরে কিছুটা স্বস্তির কথা জানান তিনি।
ঈদযাত্রায় গণপরিবহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে একই ধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন অনেকে। তারা বলছেন, ঈদের সময় লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ায় অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে রাজধানীর গণপরিবহনগুলো। সরকারের উচিত, এ ক্ষেত্রে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা। তা না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কেবল বাড়বেই।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আয়াত, বিহঙ্গ, বলাকা, তানজিলসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের সুপারভাইজাররা বলছেন, প্রতিবারই ঈদের সময় ভাড়া কিছুটা বেশি নেওয়া হয়।
"সবাই নিচ্ছে, আমরাও নিচ্ছি। এটি নতুন কিছু নয়," বলেন তারা।
আয়াত পরিবহনের এক সুপারভাইজার মিল্টন টিবিএসকে বলেন, "আমাদের অধিকাংশ বাসই ঢাকার বাইরে গেছে ট্রিপ নিয়ে; তাই এখানে বাসের সংকট। ঈদে ৫/১০ টাকা বেশি সবাই-ই নেয়।"