ক্রেন ট্র্যাজেডিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
উত্তরায় ক্রেন ট্রাজেডির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে অংশ নিয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প পরিচালক ও পরামর্শদাতারা এ ঘটনার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।
একনেক পরবর্তী ব্রিফিং-এ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, "উত্তরার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মর্মাহত।"
এ ধরনের ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, "প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রকল্প পরিচালক থেকে ঠিকাদার- সংশ্লিষ্ট সবাইকেই তদন্তের মধ্যে আনতে হবে। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।"
সোমবার উত্তরার জসিমউদ্দিন রোডে ১৫০ টন ওজনের গার্ডার চাপায় নিহত হন ২ শিশুসহ ৫ জন।
আজ সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে।
গতকালের ঘটনার বিআরটি-৩ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চীনা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই আফরান মন্ডল বাবু চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে এ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে বলে জানান উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন।
তিনি বলেন, "মামলায় ক্রেন অপারেটরকেও আসামি করা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।"
সোমবার উত্তরার জসীমউদ্দিন এলাকায় চলন্ত প্রাইভেট কারের ওপর একটি দেড়শ টনের গার্ডার এসে পড়ে।
এ ঘটনার পরপরই নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) নামে দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন হৃদয়ের বাবা মো. রুবেল মিয়া (৫০), নববধূ রিয়ার মা ফাহিমা (৪৫, ফাহিমার বোন ঝর্ণা (২৮) এবং তার দুই শিশুসন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশেষায়িত বাসের জন্য পৃথক লেন তৈরির প্রকল্পটি তিনটি সরকারি সংস্থা- সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি), বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ দ্বারা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনটি সংস্থার কাজের সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিন প্রকল্প পরিচালক।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১২ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১০ বছরে কাজের এক তৃতীয়াংশও শেষ হয়নি। ইতোমধ্যে, প্রকল্প সমাপ্তির মেয়াদ এবং ব্যয় উভয়ই দ্বিগুণ হয়েছে।
ধীরগতির কারণে, প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ২০৩৯.৮৪৮৯ কোটি টাকা থেকে ১০৯ শতাংশ বেড়ে ৪২৬৮.৩২ কোটি টাকা হয়েছে। এডিবিসহ তিনটি দাতা সংস্থা প্রকল্পটির জন্য ২ হাজার ৮৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে।