'জঙ্গী' বলে ঢাবি হল প্রশাসনের পুলিশে দেওয়া শিক্ষার্থীকে ছেড়েছে পুলিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফকে গতকাল শিক্ষকদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এর আগে ক্লাসের গ্রুপচ্যাটের মেসেজকে কেন্দ্র করে জিয়া হল ছাত্রলীগের সদস্যরা ওই ছাত্রকে প্রভোস্টের কাছে নিয়ে গেলে 'জঙ্গি' সম্পৃক্ততার 'সন্দেহে'র কথা বলে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জিয়া হলের প্রভোস্ট মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন।
তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ টিবিএসকে বলেন, ফেসবুকে সমালোচনা করায় ওই ছাত্রকে আমাদের কাছ দেওয়া হয়েছিল। পরে শিক্ষকেরা তাকে নিয়ে গেছেন। তবে আমরা তার বিষয়ে বিস্তর যাচাই বাছাই করে দেখছি।
মেফতাহুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র৷ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপে ২০০৫ সালের একযোগে সিরিজ বোমা হামলা ও ছাত্রলীগের কর্মসূচির কারণে দুর্ভোগ নিয়ে আলোচনার পর হল শাখা ছাত্রলীগ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে প্রশাসনের কাছে নিয়ে যায়, এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে তাকে পুলিশে দেন হল প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন৷
প্রাধ্যক্ষ দাবি করেছিলেন, মেফতাহুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ এরপর শুক্রবার দুপুরে ওই ছাত্রকে থানা থেকে নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ৷
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে ১৭ আগস্ট ছাত্রলীগের কর্মসূচির কারণে রাস্তায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করে চৌদ্দশিখা নামের গ্রুপটিতে কিছু সমালোচনামূলক কথা লিখেছিলেন মেফতাহুল মারুফ৷
তিনি লিখেছিলেন, "সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে জামাআতুল মুজাহিদীন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে, সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতায় থাকায় ওই হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াত দায়ী হলে ২০০৮ সালের পরের সব জঙ্গি হামলার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী।"
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীকে নিতে শাহবাগ থানা থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার কয়েকজন নেতা। পরে তাদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।