মেডিকেল অক্সিজেনের সহজলভ্যতা আরো অনেক শিশুর জীবন বাঁচাতে পারে: বিশেষজ্ঞরা
মেডিকেল অক্সিজেনের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করলে নিউমোনিয়া থেকে হাইপোক্সেমিয়া হওয়া শিশুদের জীবন বাঁচানো যেতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
হাইপোক্সেমিয়া এমন একটি রোগ, যেটিতে আক্রান্ত হলে শিশুদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়।
আইসিডিডিআর,বি-র বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসানুর রহমান বলেন, "নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের হাইপোক্সেমিয়া হলে যদি তারা সময়মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন না পায়, তাহলে তাদের মৃত্যু ঘটতে পারে। দ্রুত অক্সিজেনের যোগান দিলেই কেবল তাদের মৃত্যুহার কমতে পারে।"
বুধবার আইসিডিডিআর,বি এবং ডাটা ফর ইমপ্যাক্ট যৌথভাবে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবসের আগে আয়োজিত 'মেডিকেল অক্সিজেন নিরাপত্তা: প্রশ্বাসের অধিকার নিশ্চিত করার উপায়' শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "সরকার যদি শিশু স্বাস্থ্যের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায়, তাহলে নিউমোনিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিয়ে কাজ করা উচিত। সমস্ত হাসপাতালে রোগ শনাক্ত করার সুবিধা এবং দ্রুত প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকা উচিত।"
মেডিকেল অক্সিজেনের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রতিটি হাসপাতালে অক্সিজেন সহজলভ্য করার জন্য একটি কার্যকর কর্মপরিকল্পনার আহ্বান জানান এই চিকিৎসা বিজ্ঞানী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, নিউমোনিয়া বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
গড়ে প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে ৮ জন জন্মের পাঁচ বছরের মধ্যে নিউমোনিয়ায় মারা যায়। নিউমোনিয়া থেকে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হাইপোক্সেমিয়া।
বাংলাদেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাধ্যমিক হাসপাতালে যাওয়া শিশুর প্রায় ৪২ শতাংশ হাইপোক্সেমিয়ায় ভুগছে বলে জানান তারা।
বক্তারা আরো বলেন, হাইপোক্সেমিয়ায় ভুগছেন এমন ব্যক্তির দেহে ম্যালেরিয়া, সেপসিস, যক্ষ্মা, দীর্ঘস্থায়ী বাধা, ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ, হাঁপানি ইত্যাদি রোগও বাসা বাঁধতে পারে।
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সুবিধা সমীক্ষা ২০১৭ অনুসারে, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অক্সিজেন সিস্টেম (কমপ্রেসড গ্যাস সিস্টেম, পোর্টেবল অক্সিজেন কনসেনট্রেটরস ও লিকুইড অক্সিজেন) আছে এমন স্বাস্থকেন্দ্রের সংখ্যা এক-চতুর্থাংশেরও কম।
করোনার পিক আওয়ারে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়াতে সরকার বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নিলেও সেগুলো মোটেই যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
অক্সিজেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এছাড়াও, জীবন রক্ষাকারী এ সরঞ্জামটির সঠিক বিতরণও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তারা।