নৌ শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে নৌ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে নৌযান মালিক-শ্রমিক নেতাদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নবী আলম।
এর আগে শনিবার মধ্যরাত থেকে দাবি আদায়ে কর্মবিরতি শুরু করে নৌ-শ্রমিকরা। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে থাকা ৩৫টি মাদার ভেসেল ও ২ হাজার ৫৯৩টি লাইটার জাহাজে আটকা পড়ে ১৬ লাখ টন পণ্য।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ধর্মঘট শুরুর আগে ২২টি মাদার ভেসেল থেকে পণ্য আনলোড ও পরিবহনের কাজ চলছিল, যা শনিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটারেজ জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নৌযান শ্রমিকদের সহসাই ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং এতে করে, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও শিপিং এজেন্টরা।
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি- সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'দাবিদাওয়া থাকলে শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানাবে, কিন্তু দেশের এমন সংকটকালে এভাবে ধর্মঘট আহ্বান- কখনোই কাম্য হতে পারে না। কয়েকদিন আগেও তারা ধর্মঘট করেছিলেন, তখন সব সমস্যা সমাধান না করে- আবারও ধর্মঘট করেছেন। এতে শিপিং এজেন্ট হিসেবে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তেমনি দেশের ভাবমূর্তিও সংকটে পড়ছে।'
এদিকে শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো- মজুরি পুনঃনির্ধারণ করে নূন্যতম ২০ হাজার টাকা করা; মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা করা; শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ; ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দেওয়া; বাল্কহেডের রাত্রীকালীন চলাচলের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা; বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করা; চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা; চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা; কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ড ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন।