মেরিটাইম শিল্পে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত কাস্টমস, বন্দরের পাইলটিং: এমএসিএন
বাংলাদেশের মেরিটাইম শিল্পে কাস্টমস, বন্দরের পাইলটিং ও নিয়ন্ত্রণ খাতকে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিপ্রবণ খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা। এসব খাতের দুর্নীতি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
তবে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা (আইএমও) কিংবা বাংলাদেশ- কারোরই এই শিল্পের দুর্নীতি ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মেরিটাইম অ্যান্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন এমএসিএন'র প্রকল্প ব্যবস্থাপক কমডোর (অব.) সৈয়দ আরিফুল ইসলাম।
এমএসিএন'র মতে, এই দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান প্রভাব দেশের শিপিং শিল্পের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
সৈয়দ আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, কিছু গবেষণার ফল অনুযায়ী, এই খাতে দুর্নীতি দমনের চেষ্টা কিছুটা উন্নত করা গেলেও বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমপক্ষে ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, দেশের নৌপরিবহন খাতে দুর্নীতির নানান ধরনের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে দেশের অর্থনীতিতে, যেমন- শিপিং কোম্পানিগুলোর জন্য বন্দর নির্ধারিত বিভিন্ন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ খরচ, এছাড়া বন্দরগুলো রাজস্ব হারানোর ফলে ব্যবসায়ের খরচ বেড়ে যায়; এতে করে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হন এবং স্থানীয় কোম্পানিগুলোও তাদের ব্যবসা হারায়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, অনেক সময় কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পেতে বিলম্ব হয়, জাহাজে কার্গো শর্টেজ হয়। ফলে জাহাজে পিএন্ডআই ক্লেইমের (সুরক্ষা এবং ক্ষতিপূরণ দাবি) সংখ্যা বাড়ে।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে জাহাজের দৈর্ঘ্য এবং ড্রাফট নিয়ে মিস ডিক্লারেশন বা ভুল তথ্য দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে চট্টগ্রাম বন্দর জাহাজের পাইলটের সংখ্যা এবং তাদের বেতন বৃদ্ধি করেছে। ফলে ২০১৮ সালের পর দুর্নীতি তুলনামূলকভাবে কমেছে।
বন্দরের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া নির্ভর করে জোয়ার-ভাটার ওপর। রাতে বড় জাহাজ হ্যান্ডলিং করা যায় না। তবে নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হয়েছে।
সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। বন্দরে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ানো শুরু হয়েছে। গ্যান্ট্রি ক্রেন সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় আরও সরঞ্জাম কেনার পরিকল্পনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।