জল্লাদখানা বধ্যভূমির পরিবেশ বদলে গেল সবুজায়ন কর্মসূচিতে
রাজধানীর মিরপুরে জল্লাদখানা বধ্যভূমির পাশের সেকেন্ডারি বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) কিছুদিন আগেও এলাকাসীর জন্য ছিল দৃষ্টিকটু। একদিকে বর্জ্যের দুর্গন্ধ, অন্যদিকে এসটিএসের অব্যবস্থাপনার জন্য বিরক্তির কারণ ছিল এ এলাকা। যদিও পাশেই একটি উন্মুক্ত স্থান দখলমুক্ত করে শিশুদের জন্য খেলাধুলার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিল। তবে এসটিএস আশপাশের পরিবেশের কারণে সেখানে ঠিকমতো খেলাধুলা করা যেত না।
মিরপুর-১০-এর জল্লাদখানা বধ্যভূমির এসটিএস গ্রাফিতি আর্ট ওয়ার্ক এবং 'মুক্তির সবুজায়ন' শীর্ষক বৃক্ষরোপণ প্রকল্পের মাধ্যমে জায়গাটির পরিবেশ পাল্টে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
সেইসঙ্গে এসটিএসের বর্জ্যের দুর্গন্ধ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য পাইলটিং বায়োজিক্যাল সল্যিউশনের একটি প্ল্যান্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে অল্প সময়ের ট্রিটমেন্টে এসটিএসে তৈরি হওয়া দুর্গন্ধ রোধ করা হবে।
ডিএনসিসির উদ্যোগে শক্তি ফাউন্ডেশন এবং মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এসটিএসে কার্টুন অঙ্কন, শিশুবান্ধব গণপরিসরের মাঠে ঘাস রোপণ, প্রায় ১ হাজার ৩০০ টি বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণসহ এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পরিত্যক্ত জায়গা উদ্ধার করে এভাবে বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সবুজায়ন এবং শিশুবান্ধব করে তোলা হবে। এ কাজে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন ডিএনসিসির মেয়র।
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, এসটিএসের দুর্গন্ধ রোধের পাইলটিংয়ে বায়োলজিক্যাল প্ল্যান্ট যদি সঠিকভাবে কাজ করে তবে উত্তরের সবগুলো এসটিএসে এ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে ইউএন হ্যাবিটেট, নগর গবেষণা কেন্দ্র (সিইউএস), ভূমিজ, বার্জার বাংলাদেশ লিমিটেড, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় মিরপুর-১০-এর জল্লাদখানা বধ্যভূমির উল্টোপাশের পরিত্যক্ত স্থানের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা ব্যায়ে স্থানটিকে শিশুবান্ধব গণপরিসরে পরিনত করা হয়। তখন এ গণপরিসরটিতে শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলার উপকরণ, ব্যায়াম ও হাঁটার সুব্যবস্থা, একটি উন্মুক্ত মঞ্চ, বসার স্থান, পাবলিক টয়লেটসহ বিভিন্ন সুবিধার ব্যবস্থা করে।
পরে স্থানটিকে সবুজায়ন করতে এবং আশপাশের দেয়ালে শিক্ষামূলক কার্টুনে রাঙিয়ে তুলতে ২০২২ সালের শেষের দিকে শক্তি ফাউন্ডেশন ও মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।