ঢাকার ১৮% বাড়িতে এডিসের লার্ভা: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ জরিপের তথ্য বলছে, রাজধানীর ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে। সাধারণত কোনো এলাকার ৫ শতাংশ বাড়িতে এই লার্ভা পাওয়া গেলে সেই পরিস্থিতিকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বিবেচনা করা হয়।
গত ১৮ থেকে ২৭ জুন এই জরিপ চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ার পাশাপাশি ঢাকায় এডিস মশার ঘনত্বও বাড়ছে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় মশা নিধন, ভেক্টর কন্ট্রোল ও জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম সোমবার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এই জরিপের প্রাথমিক তথ্য জানান। চলতি সপ্তাহে জরিপের প্রচার কর্মসূচী করা হবে, তখন কোন কোন এলাকায় এডিসের ঘনত্ব বেশি সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮ ওয়ার্ডে প্রাক-বর্ষার এই জরিপ চালানো হয়। ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৮টি ওয়ার্ডে এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। এই ওয়ার্ডগুলোর ৫৪৯টি বাড়িতে মিলেছে এডিসের লার্ভা।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, 'ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশক নিধন, উড়ন্ত মশা মারা, ভেক্টর কন্ট্রোল ও কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তা না হলে ডেঙ্গু মোকাবেলা করা যাবে না। হাসপাতালে শুধু বেড বাড়ালে হবে না, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মশা মারতে হবে।'
ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ছে, তাই মৃত্যু ঠেকাতে জ্বর হলেই ডেঙ্গু টেস্টের পরামর্শ দেন অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'জ্বর হলে ডাক্তার দেখাতে হবে বা হাসপাতালে যেতে হবে, টেস্ট করার পর ডাক্তার যদি মনে করেন বাড়িতে রাখা যাবে তাহলে রোগী বাড়িতে থাকবে নাহলে হাসপাতালে থাকবে। জ্বর হলে পুরোটা সময় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। পেট ব্যথা, বমিসহ ঝুঁকিপূর্ণ কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। প্রয়োজনে ১৬২৬৩ হটলাইনে ফোন করে স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।'
এদিকে, গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৩৬ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গত বছর সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়, যা ২০১৯ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যুর পর সর্বোচ্চ। এছাড়া, একই সময়ে সারাদেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২,৪২৩ এবং মোট সুস্থ হয়েছিলেন ৬১,৯৭১ জন।