১ জানুয়ারি পর্যন্ত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির সময় বাড়াল বিএনপি
সরকারের পদত্যাগের একদফা এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ফের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির সময় বাড়িয়েছে বিএনপি। এর আওতায় আগামীকাল রোববার ( ৩১ ডিসেম্বর) এবং নতুন বছরের প্রথম দিন সোমবার (১ জানুয়ারি) এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
আজ শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই ঘোষণা দেন।
রিজভী বলেন, 'সরকারের পদত্যাগের দাবিতে একদফার আন্দোলন এখন বেশি ত্বরান্বিত হচ্ছে। সকল জনগণ আমাদের কর্মসূচিতে সমর্থন দিচ্ছে। হাটে-মাঠে, খেতে-খামারে বাজারে-শপিংমলে জনগণকে আমাদের নেতা-কর্মীরা লিফলেট দিয়েছে। তারা আমাদের কথা শুনেছেন এবং সমর্থন দিচ্ছেন। কিন্তু, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সরকার ২০১৩-১৪ সালে যেভাবে ষড়যন্ত্র করেছে– সেটাই আবারও করছে। পুলিশ হয়রানি করছে, গ্রেপ্তার ও মামলা দিচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, 'শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির সর্বময় ক্ষমতাধর হওয়ার ইচ্ছার কারণে আজ সারাদেশকে নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে সরকার। অথচ একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির চেতনা। কিন্তু আজকে দেশের মানুষ আতঙ্কের মাঝে দিন পার করছে। দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটেছে এবং নারকীয় প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। চারদিকে পুলিশ-র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রাজত্ব চলছে। বাড়ি থেকে লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করছে। গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য দিচ্ছে না।"
রিজভী বলেন, "শেখ হাসিনা জনগণকে আতঙ্কের মধ্যে রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন। তিনি তো জনগণের ওপর তার সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সীমাহীন দমন-পীড়ন চালাচ্ছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে। দেশকে নিয়ে গভীর ও ভয়ানক চক্রান্ত চলছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে" বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
এছাড়াও সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভোট বর্জনে লিফলেট বিতরণকালে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, এবং ৬টি মামলায় ৪২৯ জনের বেশি আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের পর এখন ভোটারদের কেন্দ্রবিমুখ করাই মূল লক্ষ্য বিএনপির। সাধারণ মানুষকে ভোটে নিরুৎসাহিত করতে সব ধরনের চেষ্টা করবে দলটি। ভোটদানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সারা দেশে ১ কোটির বেশি লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভার্চুয়াল মাধ্যমেও নানা কৌশলে ভোট বর্জনের প্রচার অব্যাহত রয়েছে।