সংকুচিত হচ্ছে শ্রমবাজার, বেড়েছে অদক্ষ অভিবাসন: রামরু
প্রতারণার মাধ্যমে ভিসা বাণিজ্য করে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কর্মী পাঠানোর কারণে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হচ্ছে বলে মনে করে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) '২০২৪ সালে শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি: অর্জন ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে রামরু জানায়, চলতি বছরে স্বল্পদক্ষ তথা অদক্ষ শ্রমিক অভিবাসনের হার গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়েছে।
২০২৪ সালে যারা কর্মের উদ্দেশ্যে বিদেশে গেছেন, তাদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২৩ শতাংশ (চার লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ জন) স্বল্পদক্ষ শ্রমিক। এ হার ২০২৩ সালে ছিল ৫০ শতাংশ।
এছাড়া, অভিবাসীদের মধ্যে ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ছিলেন পেশাজীবী, ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ দক্ষ, এবং ১৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ আধাদক্ষ শ্রমিক।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নয় লাখ ছয় হাজার ৩৫৫ জন পুরুষ ও নারী বিদেশে কর্মের উদ্দেশ্যে গেছেন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৪৫৩ জন।
রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, '২০২৪ সালে বেশ কিছু দেশে শ্রম অভিবাসন বন্ধ রয়েছে। ওমান, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালদ্বীপসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ বছর কোনো অভিবাসন ঘটেনি।'
তিনি আরও বলেন, 'ইতালিতে জাল কাগজপত্র এবং সার্বিয়ার আবেদন প্রক্রিয়ার সার্ভার অকেজো হওয়ার কারণে এ দেশগুলোতে অভিবাসন কার্যক্রম থেমে আছে।'
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্রে বাংলাদেশের একক গন্তব্যকেন্দ্রিক বাজার ব্যবস্থাকে বিভিন্ন বাজার বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
শ্বেতপত্র অনুযায়ী, নতুন কোনো বাজার খুললে সেখানে বাংলাদেশের এবং গন্তব্য দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ব্যাপকভাবে কর্মী পাঠানো শুরু করে।
'কিন্তু সেসব দেশের লেবার উইং নিয়োগকর্তার সক্ষমতা বা ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই ছাড়া ছাড়পত্র দিলে, তা পরে অব্যবস্থার সৃষ্টি করে এবং নিষেধাজ্ঞার কারণ হয়ে দাঁড়ায়,' বলেন তাসনিম সিদ্দিকী।
চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসের অভিবাসন গতি বজায় থাকলে বছরের শেষে প্রায় ১০ লক্ষাধিক কর্মী বিদেশে যেতে পারেন বলে জানিয়েছে রামরু।
অর্থাৎ, রামরুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে (নভেম্বর পর্যন্ত) অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ কম হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের কারণে জুলাই ও আগস্ট মাসে অভিবাসনের গতি ব্যাহত হয়, যার প্রভাব সার্বিক পরিসংখ্যানে ফুটে উঠেছে।
'রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর দাবি ছিল অভিবাসন প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কমানো। মন্ত্রণালয়ের তৎপরতায় অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে প্রতি মাসে লক্ষাধিক কর্মী বিএমইটির ক্লিয়ারেন্স নিয়ে বিদেশে গেছেন।'