৭ খাতে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না: জামায়াত সেক্রেটারি
সংস্কার ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পুলিশ, প্রশাসন, জুডিশিয়ালসহ ৬-৭টা ডিপার্টমেন্টের [খাত] সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। নাহলে আবার ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪-এর [নির্বাচনের] মতো হবে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, 'নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমাদেরই লাভ। তাই আমরা বলি, বাংলাদেশের মানুষও চায়—একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। আগে নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার প্রয়োজন, তা শেষ করুন। সংস্কার শেষ করে ছয় মাস পরে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন, তাতে যতটুকু সময় লাগে।'
'একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গত ১৫ বছর আমরা যদি অপেক্ষা করতে পারি, তাহলে আরেকটা ভালো নির্বাচনের জন্য দুই-চার মাস আগে হলো বা পরে হলো—তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্বাচনটি নিরপেক্ষ হবে কি না, সেটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ততটুকু সময় দিতে জামায়াতে ইসলামী রাজি আছে।'
তিনি বলেন, 'সংস্কার ও নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করুন। যৌক্তিক সময় যতটুকু লাগবে জামায়াতে ইসলামী তা দেবে। তবে নির্বাচনের আগে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করতে হবে; জনগণ তা দেখতে চায়।'
এ সময় বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, 'কেউ কেউ অস্থির হয়ে গেছে; বলে—সংস্কারের কোনো দরকার নাই। সংস্কার হলো একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে হবে।'
'এ কথার মধ্যে আমরা অন্য গন্ধ পাই। এটা আমি আর মামুর নির্বাচনের মতো, তোমরাও কেটেকুটে বাক্স ভরতে চাও। আমরা জামায়াত ইসলামী। আমাদের কাছে টাকাও নেই, মাস্তানও নেই। আমরা ব্যালট কাটতে পারব না, কেন্দ্রও দখল করতে পারব না।'
তিনি বলেন, 'দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছেই, নতুন করে আমরা দেখতে পাচ্ছি জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আবার আওয়ামী ভাষায় কথা বলছে। ফ্যাসিবাদের লোকেরা যে ভাষায় আমাদের সমালোচনা করত, নির্মূল করতে চাইত, ওনাদের মুখে এখন সেই ফ্যাসিবাদের গন্ধ পাওয়া যায়।'
'আমরা বলি, খবরদার! এই পথ সর্বনাশা পথ। ফ্যাসিবাদী যুগের অবসান হয়েছে। এখন একটি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আসুন অনৈক্য, বিভেদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, কোনো ভূমিকায় না গিয়ে আগস্টের মূল চেতনা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে ধারণ করে আমরা একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে যাই।'
দীর্ঘ ১৮ বছর পর অনুষ্ঠিত জামায়াতের এ কর্মী সম্মেলনে জেলার ৭ উপজেলা থেকে সকাল থেকেই দলে দলে নেতাকর্মীরা হাজির হন। সম্মেলনে স্থানীয় ঊর্ধ্বতন জামায়াত নেতারাও বক্তব্য রাখেন।