৬ সংস্কার কমিশনের স্বল্পমেয়াদি সুপারিশের অর্ধেক এক মাসে বাস্তবায়ন সম্ভব মনে করেন আসিফ নজরুল
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/08/asif_nazrul_8_feb_2025_press_brief.jpg)
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ছয় সংস্কার কমিশন তিন ধাপে সংস্কারের সুপারিশ দিয়েছে—স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। এর মধ্যে যেগুলো স্বল্পমেয়াদি এবং আশু করণীয়, সেগুলোর ৫০ শতাংশ এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন।
তিনি বলেন, 'এর মধ্যে অনেক কিছুই আমাদের সংস্কার হয়ে গেছে। আর আশু করণীয় যেগুলো রয়েছে, সেগুলোর জন্য সাধারণত ছয় মাস সময় ধরা হয়।'
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের আশু করণীয় কিছু নেই। কারণ, এখানে যে সুপারিশগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। 'ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক। যদি দলগুলো চায়, রমজানেও সংলাপ চালানো যাবে,' বলেন তিনি।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কি রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের কারণে না সরকারের দুর্বলতার কারণে — এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, 'সরকারের সহনশীলতা, অবাধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি সরকারের অগাধ শ্রদ্ধাবোধের কারণেই এগুলো হচ্ছে।'
বিচার বিভাগীয় কমিশনের প্রায় শতাধিক আশু করণীয় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। এর মধ্যে তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা চালু, সরকারি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাক্ষ্য নেওয়ার মতো বিষয়গুলো আলোচনার বিষয় নয়। এসব খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, 'ক্রিমিনাল মামলার ক্ষেত্রে অসংখ্যবার এবজরমেন্ট নেওয়া হয় এবং মামলার শুনানি স্থগিত রেখে দীর্ঘ সময় নেওয়া হয়। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। এজন্য আমরা একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করতে চাই। তারপরও যদি এ বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন হয়, তা করা হবে।'
আসিফ নজরুল বলেন, গত ৫৫-৫৬ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো বহু সংস্কার করেছে। প্রতিটি দলেরই নিজস্ব সংস্কার ভাবনা রয়েছে।
'রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি এই সংশয় দূর হয় যে, এসব সংস্কার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য নয়, তাহলে অনেক কিছুই বাস্তবায়িত হবে,' তিনি বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অযথা সময়ক্ষেপণ করার কোনো ইচ্ছা নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র মেরামতের মৌলিক শর্ত পূরণ করা হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার জরুরি, সেগুলো বাস্তবায়ন করে পাশাপাশি আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলে যেতে চাই।
রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত নির্বাচন চাইলে সেটা বলার অধিকার তাদের আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা জানান, তার দুটি মন্ত্রণালয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছিল, যা সাবেক মন্ত্রীদের আত্মীয়দের ব্যাংক বা তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে পদ্মা ব্যাংক ও মধুমতী ব্যাংকের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এসব বেহাত হওয়া টাকা তুলে আনতে খবর হয়ে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে কোনো নিয়মকানুন বা আইন মানা হয়নি। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের টাকা কেন বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হবে?
সংস্কার কমিশন কালো টাকা সাদা করার আইন চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করার সুপারিশ করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।