শীঘ্রই দেশে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে আদানি, তবে কিছু মতপার্থক্য রয়ে গেছে: রয়টার্স
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/08/27/adani.jpg)
তিন মাস বিরতির পর ভারতের আদানি পাওয়ার এটির ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে সম্মত হয়েছে। তবে কোম্পানিটি ছাড় ও কর সুবিধার বিষয়ে ঢাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।
ভারতীয় বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিটি গত ৩১ অক্টোবর বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে। কারণ বাংলাদেশ তখন বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ভোগায় আদানির বিল পরিশোধে দেরি হচ্ছিল।
এতে ১ নভেম্বর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমান-সক্ষমতার দুটি ইউনিটের একটি বন্ধ করে দেওয়া যায়। পরে শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়া এবং অর্থ পরিশোধজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সীমিত সরবরাহ চালিয়ে যেতে বলে।
এখন গ্রীষ্মের বাড়তি চাহিদার আগে এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) অনুরোধে আদানি পাওয়ার আগামী সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় সরবরাহ পুনরায় শুরু করতে রাজি হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র বিষয়টি রয়টার্সকে জানিয়েছে। পূর্ব ভারতের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কেবল বাংলাদেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
তবে বিপিডিবির দাবিকৃত কয়েক লাখ ডলারের ছাড় ও অন্যান্য কর সুবিধা দিতে আদানি পাওয়ার রাজি হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে। মঙ্গলবার উভয়পক্ষের মধ্যে এক ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
'তারা কোনো কিছুতেই ছাড় দিতে রাজি নয়, এমনকি ১ মিলিয়ন ডলারও নয়,' আদানি পাওয়ারের দিকে ইঙ্গিত করে জানায় একটি সূত্র। 'আমরা কোনো ছাড় পাইনি। আমরা পারস্পরিক সমঝোতা চাই, কিন্তু তারা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) শর্ত মেনে চলার দাবি করছে।'
বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি সপ্তাহের শুরুতে রয়টার্সকে বলেছিলেন, 'এখন আদানির সঙ্গে কোনও বড় সমস্যা নেই' এবং শিগগিরই পূর্ণমাত্রায় সরবরাহ শুরু হবে। তিনি আরও জানান, আদানির প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধ ত্বরান্বিত করতেও কাজ করছে বাংলাদেশ।
আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্রও তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি। মঙ্গলবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের পর কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে জানায়, 'বিদ্যুৎ সরবরাহ বিদ্যুৎ ক্রেতাদের প্রয়োজনের ওপর নির্ভরশীল, যা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে।'
গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র জানিয়েছিল, বিপিডিবির কাছে কোম্পানির পাওনা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার। তবে করিম তখন দাবি করেন, প্রকৃত বকেয়ার পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ শুল্ক নির্ধারণ পদ্ধতি নিয়েই মূলত এই মতপার্থক্য।
বিপিডিবি এর আগে আদানি পাওয়ারকে কয়েক লাখ ডলারের কর সুবিধা দেওয়া এবং চলতি বছরের মে পর্যন্ত এক বছর ধরে চলা একটি ছাড় কর্মসূচি পুনরায় চালুর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল।