আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকলে আমি নিজেই তার ফাঁসি দাবি করতাম: ইশতিয়াকের মা
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডে আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার শাস্তি মেনে নিতে পারেননি তার মা কুলসুমা খাতুন (শেলী)। তার দাবি, হত্যাকাণ্ডের সময় মুন্না বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন।
কুলসুমা খাতুন বলেন, 'আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকলে আমি নিজেই তার ফাঁসি দাবি করতাম।'
চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘরগাও গ্রামের আব্দুল আহাদ ও কুলসুমা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান ইশতিয়াক। বাবা আহাদ ছিলেন ইউপি মেম্বার। ২০০৯ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনি মারা যান। রেখে যান তিন পুত্র সন্তান।
ইশতিয়াকের বড় ভাই ক্যাপ্টেন আশফাক আহমেদ মনির বর্তমানে সিলেট সেনানিবাসে কর্মরত। ছোট ছেলে ইফতেখার আহমেদ রানা সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইসি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র।
কুলসুমা খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পর তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাতবর্গ গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখানে মাহবুবুর রশীদ জহির নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে তার বিয়ে হয়। ওই ঘরে উম্মে হাবিবা রাহা নামে এক কন্যা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে জিপিএ ফাইভ পেয়ে এসএসসি পাস করেন ইশতিয়াক। এরপর তিনি ঢাকা ক্যামব্রিয়ান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ওই পরীক্ষাতেও জিপিএ ফাইভ পান। এরপর ভর্তি হন বুয়েটে।
আবরারকে হত্যার সময় বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ইশতিয়াক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না দাবি করে কুলসুমা খাতুন বলেন, ওইদিন তার ছেলে প্রতিবেশী রাসেল নামে এক ব্যাংকারের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বাড়িতে ছিলেন। ৬ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে ইশতিয়াক বাড়ি থেকে এনা বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। ভোর সোয়া চারটার দিকে তিনি শেরেবাংলা হলে পৌঁছেন। সকাল ১০টার দিকে ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ছেলে শান্তশিষ্ট প্রকৃতির উল্লেখ করে কুলসুমা খাতুন বলেন, 'রায় শোনার পর মুন্নার সাথে আধামিনিট আলাপ করতে পেরেছি। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শুধু দোয়া করতে বলেছে।'
এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান কুলসুমা খাতুন।
ইশতিয়াকের চাচা মোস্তফা আলী বলেন, 'সে যে ঘটনায় জড়িত ছিল না এর প্রমাণ হিসেবে বহু কিছু আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এরপরেও এত বড় শাস্তি মেনে নেওয়া কঠিন।'