প্রধান অর্থনীতির কিছু দেশ ২০২৩ সাল নাগাদ মন্দা-কবলিত হবে: নোমুরা
বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতায় বাড়ছে দেশে দেশে সরকারি আর্থিক নীতির চাপ, মূল্যস্ফীতিও ঊর্ধ্বমুখী। এতে ২০২৩ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রধান প্রধান কয়েকটি অর্থনীতি মন্দার শিকার হবে বলে অনুমান করছে নোমুরা হোল্ডিংস ইনকর্পোরেশন। ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও মন্থর হতে বাধ্য হবে।
পৃথিবীর শীর্ষতম ব্রোকারেজ সংস্থাটির এক গবেষণা নোটে এর অর্থনীতিবিদদ্বয় রব সুব্রাহ্মণ ও সি ইং তোহ জানান, নোমুরা অনুমান করছে- ইউরো জোনসহ যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং এমনকী যুক্তরাষ্ট্রেও মন্দা আঘাত হানবে।
উভয় বিশেষজ্ঞ আরও বলেছেন যে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি তাদের মুদ্রানীতি কৌশল ও কর্মপদ্ধতি কাজে লাগাচ্ছে। "কিন্তু, মুদ্রানীতি বেশি কঠোর হলে তার আওতায় প্রবৃদ্ধিকে বিসর্জন দিতে হবে। ২০২৩ সালে নীতিনির্ধারণী সুদহার কমানোর আগেই তা হতে পারে।"
গবেষণা নোটে তারা উল্লেখ করেন, "বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এক সমন্বিত মন্থর অবস্থার দিকে যাচ্ছে এমন লক্ষণগুলি স্পষ্ট হচ্ছে। এই অবস্থায় কোনো দেশ রপ্তানি বৃদ্ধির ওপরও নির্ভর করতে পারবে না। একারণে আমরা একাধিক স্থানে মন্দার আভাস দিতে বাধ্য হচ্ছি।"
"মূল্যের চাপ নিত্যপণ্য থেকে ভাড়া ও সেবা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় উচ্চ মূল্যস্ফীতিও অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।"
"মন্দার গভীরতা দেশভেদে ভিন্ন হবে। নোমুরা যুক্তরাষ্ট্রে অগভীর তবে দীর্ঘ মন্দার আশঙ্কা করছে যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক থেকে শুরু হয়ে আরও পাঁচ প্রান্তিক জুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে। রাশিয়া সম্পূর্ণরূপে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে ইউরোপে মন্দা হতে পারে আরও গভীর"- সুব্রাহ্মণ ও সি ইং তোহ যোগ করেছেন।
নোমুরার পূর্বানুমান, ২০২৩ সালে ১ শতাংশ সংকুচিত হবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরো জোনের অর্থনীতিগুলি।
কিন্তু, সুদহার বৃদ্ধি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মধ্য-আকারের অর্থনীতিতে আবাসন খাতে ধস নামালে এসব স্থানে পূর্বাভাসে যা বলা হয়েছে তার চেয়ে গভীর মন্দা দেখা দিতে পারে।
২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিক নাগাদ, দক্ষিণ কোরিয়া প্রধান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে সবার আগে মন্দার শিকার হতে পারে, এতে ২.২ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচন দেখা দিবে।
নোমুরার অর্থনীতিবিদেরা জানান, "চলমান নীতিসমর্থনের সুবাদে প্রধান অর্থনীতিগুলির মধ্যে জাপানে সবচেয়ে মৃদু মন্দার আভাস দেওয়া হয়েছে। করোনার পর দেরিতে অর্থনীতি সচল হওয়া এর আরেকটি কারণ।"
মানানসই নীতিসমর্থনে করোনার অভিঘাত দ্রুত কাটিয়ে উঠছে চীন। তবে বেইজিং শূন্য-কোভিড সহনশীলতার নীতি ধরে রাখলে দেশটি আবার নতুন করে লকডাউনের কবলে পড়ে প্রবৃদ্ধির গতি হারাবে বলে উল্লেখ করেছে নোমুরা।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ