এআইয়ের কারণে বিশ্বে ৩০ কোটি চাকরি ঝুঁকিতে পড়বে: গোল্ডম্যান স্যাকস
চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর কারণে প্রায় ৩০ কোটি ফুলটাইম চাকরির বাজার দখল করতে পারে এআই, জানালো গোল্ডম্যান স্যাকস। সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে প্রতিনিয়ত চ্যাটজিপিটির মতো এআই চ্যাটবট তৈরি হচ্ছে। এ প্ল্যাটফর্মগুলোর ফলে মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা যেন বহুগুণে বেড়ে গেছে।
গত রোববার গোল্ডম্যান স্যাকস প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, পৃথিবীর ১৮ ভাগ চাকরি পুরোপুরিভাবে কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে দৈহিক পরিশ্রম করা চাকরিজীবীদের থেকে অফিস কিংবা ডেস্কভিত্তিক চাকরিজীবীরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ চাকরিতে এআইয়ের ব্যবহার শুরু হতে পারে বলে রিপোর্টে ধারণা করা হয়েছে। একইসাথে এ দুই অঞ্চলের প্রায় ২৫ ভাগ চাকরি পুরোপুরিভাবে এআইয়ের দখলে চলে যেতে পারে।
গোল্ডম্যান স্যাকস বলে, জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি যথাযথভাবে সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলে তা মানুষের চাকরি বাজারের জন্য একটি বড়সড় ধাক্কা হতে পারে। আর এই জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই মূলত ওপেনএআইয়ের চ্যাটবট প্ল্যাটফর্ম চ্যাটজিপিটি তৈরি করা হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে চ্যাটজিপিটি উন্মুক্তের পর থেকেই প্রযুক্তিবিদরা প্ল্যাটফর্মটির সক্ষমতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গল্প, কবিতা লেখা থেকে শুরু করে জটিল সব গাণিতিক সমাধান, এমনকি অভিনব সব বিজনেস আইডিয়াও দিতে পারে।
চলতি মাসে প্ল্যাটফর্মটির নতুন সংস্করণ জিপিটি-৪ যেন আরও একধাপ এগিয়ে। পূর্ববর্তী সংস্করণের সীমাবদ্ধতা অনেকাংশে কাটিয়ে জিপিটি-৪ এখন কোডিং, ওয়েবসাইট ও গ্রাফিক্স তৈরি এবং পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করার মতো সক্ষমতারও প্রমাণ দিচ্ছে।
চ্যাটজিপিটির এতসব দক্ষতার কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে অনেকে। রিপোর্টে বলা হয়, এটা ঠিক যে কর্মক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে মানুষ চাকরি হারাতে থাকবে। তবে প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রথমদিকে মানুষ চাকরি হারালেও পরবর্তীতে ঐ প্রযুক্তিকে ঘিরেই যে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়, সেটিও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
অবশ্য মানুষের চাকরির বাজারে ঝুঁকি সৃষ্টি করলেও সর্বোপরি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এআই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আগামী ১০ বছরে বৈশ্বিক জিডিপি বাৎসরিক ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।
রিপোর্টে বলা হয়, "এআইয়ের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে বহু চাকরিজীবীর চাকরি ঠিকই হুমকির মুখে পড়বে। বিশ্বের অর্থনীতিক অন্যতম পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারের ২৫ থেকে ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে এআই জায়গা করে নেবে। তবে একইসাথে এআইয়ের অটোমেশনের ফলে কাজের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং উৎপাদন বাড়বে।"