জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের সাময়িক স্থগিতাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের একটি ফেডারেল আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশকে সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। খবর বিবিসির।
মার্কিন জেলা আদালতের বিচারক জন কফেনর ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে 'সংবিধান পরিপন্থী' উল্লেখ করে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৫ মিনিটের শুনানির পর আদেশটি ১৪ দিনের জন্য কার্যকর হওয়া থেকে বিরত রাখেন।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর দীর্ঘদিনের প্রচলিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী প্রায় প্রত্যেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পান। তবে ট্রাম্প এই নিয়মটি অবৈধ বা অস্থায়ীভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের সন্তানদের জন্য বন্ধ করার চেষ্টা করছেন।
ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয় ও অরিগন অঙ্গরাজ্য এই আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করে এবং এটি স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায়।
শুনানির সময় বিচারক কফেনর ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন করেন, 'যখন এই নির্বাহী আদেশের খসড়া তৈরি হচ্ছিল, তখন আইনজীবীরা কোথায় ছিলেন?' তিনি এই আদেশকে সাংবিধানিক দাবি করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করেন।
চারটি অঙ্গরাজ্য আদালতে দাবি করে যে, ১৪তম সংশোধনী এবং মার্কিন আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী। প্রেসিডেন্টের সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই বলেও তারা উল্লেখ করে।
আদালতে উপস্থাপিত মামলায় বলা হয়, আদেশটি কার্যকর হলে ওইসব রাজ্যের বাসিন্দারা 'তাৎক্ষণিক ও অপূরণীয় ক্ষতির' সম্মুখীন হবেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল এবং এটি কার্যকর করার জন্য অভিবাসীদের সন্তানদের পাসপোর্ট বা অন্যান্য নথি সরবরাহ বন্ধ করার পরিকল্পনা ছিল।
১৮৬৮ সালে গৃহীত ১৪তম সংশোধনী গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী মুক্ত দাসদের নাগরিকত্বের প্রশ্ন নিষ্পত্তি করেছিল।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দেয়, সংশোধনীতে ব্যবহৃত 'এবং তাদের অধিক্ষেত্রে থাকা' বাক্যাংশটি অবৈধভাবে অবস্থানরত অভিবাসীদের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করে না।
ওয়াশিংটন রাজ্যের আইনজীবী লেন পলোজোলা আদালতে বলেন, ট্রাম্পের আদেশ দেশকে 'আমাদের অন্ধকারতম অধ্যায়ে' ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
অপরদিকে, ১৮টি ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন অঙ্গরাজ্য, ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো শহর পৃথকভাবে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করেছে এবং এই মামলাটি শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।