ভারতে অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে ডাকা দেশব্যাপী ধর্মঘটে ৫০০-রও বেশি ট্রেনের যাত্রা বাতিল
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সৈনিক নিয়োগে মোদি সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্প দেশটি জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এতে বাতিল হয়েছে পাঁচশোরও বেশি ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রা। খোদ রাজধানী দিল্লির সীমানায় ভয়াবহ যানজটে আটকে আছে গাড়ির পর গাড়ি। অগ্নিপথ-বিরোধিতায় ডাকা 'ভারত বন্ধে' এই ছবিই দেখা গিয়েছে আজ মঙ্গলবার (২১ জুন)।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অগ্নিপথ প্রকল্পের নাম না করে বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, ''এই মুহূর্তে অনেক সিদ্ধান্ত অন্যায় মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি দেশ গড়ার কাজে সাহায্য করে।''
সেনাবাহিনীর নিয়োগে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় ডাকা আজকের ভারত বন্ধের আগেই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ৩৫টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে নিষিদ্ধ করেছিল ভুয়ো খবর ছড়ানো ও গোলমালের আশঙ্কায়। গ্রুপগুলি সম্পর্কে সরকার অবশ্য বিস্তৃত তথ্য দেয়নি। তবে আজ বনধের সময়ে বড়সড় গোলমালের খবর মেলেনি। গত কয়েকদিনের সহিংসার ঘটনার পর আজও গোলমালের আশঙ্কায় ৫২৯টি ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রা বাতিল করেছে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৩৪৮টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন, ১৮১টি মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন। মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, আরও বন্ধের প্রভাব পড়েছে ৫৩৯টি ট্রেনের যাত্রায়।
বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা ভারত বন্ধকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মঙ্গলবার দিল্লিতে অগ্নিপথ-বিরোধিতায় প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। যন্তর মন্তরে ছিল কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ। দিল্লির কনট প্লেসের কাছে শিবাজী ব্রিজ স্টেশনে রেল অবরোধ করলে যুব কংগ্রেসের কিছু কর্মীকে আটক করা হয়। আজ সকাল থেকেই দিল্লি ও গুরুগ্রামের মধ্যে সংযোগকারী এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যাপক যানজট শুরু হয়ে যায়। সারহাউল চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িগুলিকে চেক করতে শুরু করলে যানবাহনের লম্বা লাইন পড়ে যায়। একই হাল হয়েছে দিল্লি-নয়ডা ফ্লাইওয়ে, মিরাট এক্সপ্রেসওয়েতেও।
দিল্লির সীমানায় নজরদারির পাশাপাশি শহরের ভিতরে বাস পরিষেবাতেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। হরিয়ানার ফতেহাবাদে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী লালবাতি চক আটকে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। রোহতকের বিভিন্ন এলাকাতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়। অগ্নিপথ-বিক্ষোভের কথা ভেবে হরিয়ানার দু'টি জেলায় কোচিং সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন।
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যগুলিতেও অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় বিক্ষোভ হয়েছে। গত সপ্তাহে দানাপুর রেলস্টেশনে হিংসার ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এদিনই পটনায় একটি কোচিং সেন্টারে হানা দিয়েছে। ওই সেন্টারের প্রধানের বাড়িতেও যায় পুলিশ।
- সূত্র: আনন্দবাজার