এশিয়া কাপে ওপেনারের তালিকায় সাকিব, মুশফিক ও দুই মেহেদি
টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। একটুতেই তাসের ঘরের মতো গুঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। আর উদ্বোধনী জুটি তো সব সময়ের হতাশার নাম। এরপরও কিনা এশিয়া কাপের মতো আসরের দলে মাত্র দুজন স্বীকৃত ওপেনার নেওয়া হয়েছে। যদিও ওপেনারের প্রসঙ্গ উঠতেই অনেক 'অপশন' এর কথা জানালেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টরের আভাস, এশিয়া কাপে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে চলবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সাকিব আল হাসান বা মুশফিকুর রহিমকে দেখা যেতে পারে ইনিংস উদ্বোধন করতে। মেহেদি হাসান মিরাজ বা শেখ মেহেদি হাসানও হয়ে উঠতে পারেন ওপেনার। যদিও এই চার জনের কারোরই কোনো ফরম্যাটে একবারের বেশি ইনিংস উদ্বোধন করার অভিজ্ঞতা নেই।
সাকিব একবারই ইনিংস উদ্বোধন করেছেন জাতীয় দলের হয়ে। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওপেনার হিসেবে খেলতে নেমে ৯ রান করেন তিনি। মুশফিক ওয়ানডেতে একবার ইনিংস উদ্বোধন করেছেন। ২০০৯ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৯৮ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এ ছাড়া একটি টি-টোয়েন্টিতে ওপেনার হিসেবে খেলেছেন মুশফিক। ২০১৯ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ৫ রান করেন তিনি। মিরাজ শুধু একটি ওয়ানডেতে ওপেনার হিসেবে খেলেছেন। ২০১৮ এশিয়া কাপে দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৩২ রান করেন তিনি। এ ছাড়া একটি টি-টোয়েন্টিতে ইনিংস উদ্বোধন করেছেন শেখ মেহেদি। গত বছর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ১৩ রান করেন এই ডানহাতি।
জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ দলে ছিল পাঁচ ওপেনার। যে কারণে সমন্বয় করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। কিন্তু এশিয়া কাপের জন্য ঘোষণা করা ১৭ সদস্যের দলে রাখা হয়েছে মাত্র দুজন স্বীকৃত ওপেনার; এনামুল হক বিজয় ও পারভেজ হোসেন ইমন। জিম্বাবুয়েতে বেশি ওপেনারের কারণে সমন্বয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে, আর এবার চিন্তা কম ওপেনার হওয়ায়।
যদিও খালেদ মাহমুদের কথায় মনে হয়েছে, ওপেনার নিয়ে দলে কোনো চিন্তা নেই। চাইলেই যে কাউকে দিয়ে ইনিংস উদ্বোধন করানো সম্ভব। মুশফিককে ওপেনার হিসেবে ভাবা যায় কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'খারাপ প্রশ্ন নয়, মুশফিক হতে পারে। সাকিব হতে পারে, মিরাজ হতে পারে, শেখ মেহেদিও ওপেন করেছে। অনেকগুলো অপশন আছে আমাদের কাছে। এমন না যে নেই। তবে কম্বিনেশন অনুযায়ী চিন্তা করব।'
কোনো ওপেনারই ভালো না করায় অন্যদের জায়গা পরিবতর্ন করে খেলানোর পরিকল্পনায় বাংলাদেশ। খালেদ মাহমুদের ভাষায়, 'আমাদের ওপেনাররা তো কেউ ভালো করছে না, এই কথাটাও মাথায় নিতে হবে। আমাদের হয়তো অস্থায়ী পরিবর্তন করতে হবে কিছু ক্ষেত্রে। যেটা বলছিলাম বিভিন্ন উইকেটের পরিকল্পনা করে হয়তোব আমরা মেক-শিফট করব কিছু কিছু জায়গায়, চিন্তা করব। কে করবে সেটা আমি এখনই বলতে চাচ্ছি না। আমরা এটা নিয়ে ভাবব, এটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি।'
'জিম্বাবুয়েতে আমরা অনেককেই চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওইভাবে কেউই কিন্তু পারফর্ম করতে পারেনি। তামিম ইকবাল না খেলা আমাদের জন্য অবশ্যই প্রতিবন্ধকতার। কিন্তু আমরা অভিজ্ঞদের মধ্য থেকে খুঁজে বের করতে চাই যে, যারা ফরম্যাটে খেলেছে বা ঘরোয়াতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওপেন করেছে। কারও ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করে চিন্তা করতে পারি । এশিয়া কাপে আমরা হয়তো এসব বেশি করব।' যোগ করেন তিনি।
সর্বশেষ সফরে পাঁচজন ওপেনার থাকলেও এশিয়া কাপে দুজন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদ মাহমুদ বলেন, 'এই ফরম্যাটে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তিত না। আপনি যদি স্বীকৃত ওপেনার হিসেবে চিন্তা করেন, মুনিম শাহরিয়ার, লিটন দাস, বিজয়; এরা তো ছিল। বিজয় কিন্তু কিছু ম্যাচে তিনেও ব্যাটিং করছে। তো আমাদের পরিকল্পনা এমন ছিল যে যারা হিটার বা মারতে পারে, তাদের আমরা বিভিন্ন পজিশনে রোটেট করতে চাই। সফল হয়নি, লিটন আউট হয়ে গেছে, বিজয় টিকে আছে, বাকিরাও ওইভাবে পারফরম্যান্স করতে পারেনি।'
তবে ওপেনার নিয়ে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় দেরি হয়ে গেছে বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ। এ কারণে নিজেদেরকে ব্যর্থও বলছেন বিসিবির এই পরিচালক। তিনি বলেন, 'এটা একটা চিন্তা যে এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপে এমন একটা জায়গা, এখানে আমাদের আরও আগে থেকে পরিকল্পনা উচিত ছিল। সেটা আমরা করতে পারিনি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা বলে মনে করি। এখানে আমাদের স্বীকৃত ওপেনার বিজয় ও ইমন। তবে বাকি অনেকেই কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে ওপেন করেছে।'