বিদ্যুতের অভাবে পেট্রল পাম্প বন্ধ, জ্বালানির অপেক্ষায় দীর্ঘ সিরিয়াল
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ আছে পেট্রোল ও গ্যাস রিফুয়েলিং পাম্পগুলো। তবে জেনারেটর থাকা পাম্পগুলি সচল রয়েছে।
সচল পাম্পের সামনে দেখা যাচ্ছে যানবাহন ও জেরিক্যান নিয়ে জ্বালানি কিনতে আসা অপেক্ষমাণ মানুষের সারি। তেল নিতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেও হচ্ছে। যানবাহনের চালক ও মালিকদের সাথে এনিয়ে কথা বলেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, পাম্পে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণ প্রধানত দুটি।
প্রথমত, আগামীকাল সরকারি ছুটি থাকায় অনেকেই নিজ গাড়ি নিয়ে ঢাকার বাইরে যাবে। তাই আজ তেল ভরে নিতে এসেছে। দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক পাম্প বন্ধ হয়ে আছে। তাই যেসব পাম্প জেনারেটর দিয়ে চালানো হচ্ছে- সেখানে লম্বা সিরিয়ালে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
পরীবাগের মেঘনা পেট্রোল পাম্পে কথা হয়- চাকরিজীবী মামুনুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, 'কাল পুজার বন্ধ। তার সাথে বৃহস্পতিবারও ছুটি নিয়েছি। পরিকল্পনা করেছি, গাড়ি নিয়ে পরিবারের সবাই মিলে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাব। তাই অফিস শেষ করেই তেল নিতে আসি। প্রথমে যে পাম্পে গেলাম সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এখানে এসেছি। এখানেও দেখছি অনেক ভিড়। সিরিয়ালে বসে আছি ৪০ মিনিট ধরে। সামনে যে পরিমাণ গাড়ি দেখছি, তাতে মনে হয় আরও দেড় ঘন্টার আগে তেল পাব না'।
সাইমন নামের এক বাইকার জানান, 'আমি শ্যামলী ও আসাদগেটে দুটি পাম্প ঘুরে এসেছি। একটিতে এত বড় লাইন দেখেছি যে ভয়েই সেখানে আর যাইনি। আরেকটি বন্ধ পেয়েছি। পরে এখানে এসে লাইনে দাঁড়ালাম। এক ঘণ্টার উপরে দাড়িয়েছি। আরও ৬টি বাইক সামনে আছে। এরপর আমি তেল নিতে পারব'।
মেঘনা পাম্পের ক্যাশিয়ার তানভীর মাহমুদ বলেন, 'আমরা বিদ্যুৎ যাওয়ার সাথে সাথেই জেনারেটল চালু করেছি। অনেক পাম্প বন্ধ হয়ে যাওয়াতে এখানে চাপটা বেশি। যত দ্রুত চাপ কমানোর চেষ্টা করছি। রাত আটটা পর্যন্ত আমরা তেল দেব'।
পরীবাগের এই পাম্পের পাশেই রয়েছে পূর্বাচল গ্যাস পাম্প। তাদের জেনারেটর বিকল হয়ে যাওয়াতে দুপুরের পর থেকে সিএনজি রিফুয়েলিং বন্ধ রয়েছে। ফলে গ্যাস নিতে আসা অনেক গাড়ির জ্বালানি অবশিষ্ট না থাকায় সেখানে আটকা পড়েছে। অনেক গাড়ি এসে ফিরে যাচ্ছে।
পূর্বাচল গ্যাস পাম্পের সহকারী ফজলুর রহমান বলেন, 'আমাদের জেনারেটরের একটি যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও মেরামত করা যায়নি, তাই পাম্প বন্ধ আছে। যে মেশিনগুলো দিয়ে তেল দেওয়া হয় সেগুলো বিদ্যুৎচালিত। আবার এখন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা বাজে, তাই বিদ্যুৎ আসলেও গ্যাস দিতে পারব না। কারণ এরপর গ্যাস সরবরাহে সরকারি বিধিনিষেধ আছে'।
গ্যাস নিতে এসে আটকা পড়াদের মধ্যে সিএনজি চালক মোহাম্মদ কবির বলেন, 'প্রায় ৩ ঘন্টা যাবত এখানে বসে আছি। সকালে অল্প সময় চালিয়েছিলাম। পরে গ্যাস শেষ হওয়ার কারণে দুপুরের দিকে পাম্পে আসি। কিন্তু অনেক পাম্প বন্ধ পেয়েছি। সবশেষে এখান আসি। ততক্ষণে গাড়ির ফুয়েলও একেবারে শেষ। এখন আর যেতেও পারছি না। জানিনা কখন বিদ্যুৎ আসবে, আর এখান থেকে মুক্তি পাব'।