টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল নামিবিয়া!
২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির পথচলা শুরু। সেই বছরই সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। পরের বছর থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এই শুরুতেও আছে বাংলাদেশ। এরপর প্রতিটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই খেলেছে বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে 'নাজুক' বাংলাদেশ বিশ্বকাপেও বলার মতো কিছু করতে পারেনি। অথচ দুটি বিশ্বকাপে (চলতি বিশ্বকাপসহ) অংশ নিয়েই বাংলাদেশের চেয়ে বড় সাফল্যের মালা গেঁথে ফেলেছে নামিবিয়া।
অন্যভাবেও বলা যায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল নামিবিয়া। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৮টি ম্যাচ খেলে আফ্রিকার দেশটি, জয় পায় তিনটি ম্যাচে। রোববার অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হওয়া বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে রূপকথা লিখেছে আইসিসির সহযোগী দেশটি। ১৮ বছর পর ২০২১ সালে ক্রিকেটের কোনো বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটি সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের বিশ্ব আসরে ৯ ম্যাচ খেলে ৪টিতে জিতেছে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামিবিয়ার জয়ের গড় ৪৪.৪৪। আর বাংলাদেশের? দেশের ক্রিকেটের খবর রাখেন যারা, তারা হয়তো সহজেই উত্তরটি দিয়ে দিতে পারবেন। বাংলাদেশের জয়ের গড় নামিবিয়ার অর্ধেকও নয়। ২০০৭ সাল থেকে সাতটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে ৩৩টি, এর মধ্যে জয় ৭টি। বাংলাদেশের জয়ের গড় ২১.৮৭। রেকর্ডের বিচারে নামিবিয়ার চেয়ে পরিষ্কারভাবে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।
অনেকে বলতে পারেন, দুর্বল দলের বিপক্ষে জিতে রেকর্ড সমৃদ্ধ হয়েছে নামিবিয়ার। আদতে তা নয়, বরং এখানে এগিয়ে থাকার কারণেই নামিবিয়াকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সাত জয়ের মধ্যে কেবল একটি জয় আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর আর কোনো পূর্ণ সদস্য দেশকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
কিন্তু ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি খেলা শুরু করা নামিবিয়া বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচের মধ্যে ৪টিতে জয় পাওয়াসহ দুটি পূর্ণ সদস্য দেশকে হারিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরে আয়ারল্যান্ডকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় তারা। এবার শ্রীলঙ্কাকেও এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছে ২৫ লাখ ৪১ হাজার জনসংখ্যার দেশটি। লঙ্কানদের ৫৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছেন ডেভিড ভিসা, জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক, জনাথন স্মিটরা।
অথচ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এবং এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতায়, ম্যাচে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে নামিবিয়া। ২০০৬ সাল থেকে ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ, জিতেছে ৪৭টি ম্যাচে। বাংলাদেশের চেয়ে ১০০টি ম্যাচ কম খেলেছে নামিবিয়া, অর্থাৎ ৩৯টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তাদের। এর মধ্যে তাদের জয় ২৭ ম্যাচেও। এখানেও জয়ের গড়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে তারা।