আরিয়ান কি সত্যিই ‘নির্দোষ’!
২০২১ সালের অক্টোবরে মুম্বাইয়ের উপকূলে প্রমোদতরী 'কর্ডেলিয়া'-য় মাদকযোগের অভিযোগে শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান-সহ আরও ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এনসিবি)। এনসিবির সেই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংস্থার অন্যতম শীর্ষ অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল শাহরুখের পুত্রকে। জেলেও যেতে হয়েছিল তাকে।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই প্রমোদতরীর মাদককাণ্ড নিয়ে আবার জলঘোলা শুরু হয়েছে। আরিয়ান সহ অন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়ায় 'ফাঁক' রয়েছে বলে শুরু হয়েছিল অন্তর্তদন্ত। সেই তদন্তেই আবার উঠে এসেছে নতুন তথ্য।
প্রসঙ্গত, ওই ঘটনায় আরিয়ান প্রায় এক মাস জেলে থাকার পর তার বিরুদ্ধে মাদকচক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছিল এনসিবি। সেই সূত্রে বিষয়টিতে রাজনীতির ছায়া থাকার অভিযোগও উঠেছিল। বলা হয়েছিল, শাহরুখের ধর্মপরিচয়ের কারণেই তার পুত্র এবং পরিবারকে 'হেনস্তা' করেছে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার 'চক্রান্ত' করেছে, এমন অভিযোগও উঠেছিল। শাহরুখ নিজে ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সম্প্রতি তার স্ত্রী গৌরী খান একটি টেলিভিশন টক-শোয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তার পাশাপাশিই চলছিল ওই ঘটনাপ্রবাহে বিশেষ তদন্তকারী দলের অন্তর্তদন্ত।
কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এনসিবি)-র পরিচালক সত্যনারায়ণ প্রধানের কাছে চলতি বছরের আগস্ট মাসে ৩০০০ পাতার অন্তর্তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর । ওই তদন্তে এক সিনিয়র কর্মকর্তা-সহ এনসিবির সাত থেকে আটজন তদন্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছে। মাদক-কাণ্ডে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা নিয়েই তাদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তে যে আইনি ফাঁক রয়েছে,তা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল। সেই বিশেষ তদন্তকারী দলের বক্তব্য অনুযায়ী, তদন্তে প্রথম যে ফাঁক ছিল, তা হলো বাধ্যতামূলক শারীরিক পরীক্ষা না করানোর সিদ্ধান্ত। প্রমোদতরীতে অভিযান চালিয়ে আরিয়ান এবং তার বন্ধুদের যখন তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের সদস্যরা। এমনকি, অভিযান চালানোর সময় কোনও ভিডিও রেকর্ড করা হয়নি কেন, সে দিকেও সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল তদন্তকারী দল।
প্রসঙ্গত, মাদক চোরাচালান-চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তুললেও পরে আরিয়ানের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করে এনসিবি। প্রায় এক মাস জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়া পান তিনি।