বজ্রপাতে হাওরে ৫ কৃষকসহ ৬ জনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরে বজ্রপাতে মারা গেছেন পাঁচ কৃষক ও এক শিশু। এরমধ্যে সুনামগঞ্জে একদিনে মারা গেছেন চার কৃষক।
প্রতি বছর বৈশাখী মৌসুমে হাওরে বজ্রপাত আতঙ্ক বিরাজ করে। এই সময় ধান কাটতে গিয়ে মারা যান অনেক কৃষক ও কৃষি শ্রমিক। এবার মৌসুম শুরুর প্রথম দিকেই, শনিবার সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে চারজন কৃষক বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। শাল্লা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রাম থেকে শাষখাই যাওয়ার পথে শঙ্কর সরকার (২২), জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরে কাজ করার বাউধরন গ্রামের শিপন মিয়া (২৪), দিরাই উপজেলার উদগল হাওরে জলসুখা গ্রামের তাপস মিয়া (৩৫) এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উত্তর গাজীনগর গ্রামের ফরিদ আহমদ (৪৫) মারা যান।
জানা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা হিসেবে সুনামগঞ্জ চিহ্নিত হয়েছে কয়েক বছর আগে। বৈশাখী মৌসুমে ও বর্ষাকালে ব্জ্রপাতে প্রতি বছর জেলায় অন্তত অর্ধ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
সরকার এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন কৃষকের পক্ষে কয়েক বছর আগে তালগাছ লাগানোর প্রকল্প গ্রহণ করে। গত কয়েক বছর ধরে জেলায় কয়েক হাজার তালগাছ লাগানো হয়েছে। তবে হাওরের মতো গভীর এলাকায় তালগাছ লাগালেও সেগুলো বাঁচানো যাচ্ছে না। তাছাড়া যেগুলো বাঁচবে সেগুলোও বড় হতে দুই থেকে তিন দশক সময় লাগে। এই অবস্থায় কেবল বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালগাছ লাগানো প্রকল্প থেকে বেরিয়ে বজ্রনিরোধক বহনযোগ্য দণ্ড উদ্ভাবনের দাবি রয়েছে হাওরবাসীর পক্ষ থেকে।
নেত্রকোনায় নিহত দুই
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক শিশুসহ দুইজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বিজ্জুয়াইল হাওরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হচ্ছেন বারঘরিয়া গ্রামের (রাজালীকান্দা পশ্চিমপাড়া) মঞ্জুরুল হকের ছেলে ইয়াহিয়া (২৫) ও একই গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে রায়হান (৯)। আহত টিপন (২৭), ইসলাম (২২) ও দুর্জয়কে (৯) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকাল থেকে একদল শ্রমিক বিজ্জুয়াইল হাওরে ধান কাটছিলেন। আর ওই শ্রমিকদলের সদস্য সেলিম মিয়ার জন্য সকালের খাবার নিয়ে গিয়েছিল তার ছেলে রায়হান। এ সময় হালকা বৃষ্টির সঙ্গে আকষ্মিক বজ্রপাতে শিশু রায়হান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এছাড়া শ্রমিকদলের সদস্য ইয়াহিয়া, টিপন, ইসলাম ও দুর্জয় গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ইয়াহিয়াকেও মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মদন থানার ওসি রমিজুল হক জানান, ওই ঘটনার পর বারঘরিয়া গ্রামটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।