হাসপাতালের ডাটার তুলনায় ৫ গুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী কমিউনিটিতে
দেশে এ বছর ৭০ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তুলনায় কমিউনিটিতে আরো ৫ গুণ বেশি রোগী। তাদের সচেতন করতে না পারলে মৃত্যু কমানো যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, "আমাদের সারাদেশে জরিপের মাধ্যমে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। আশেপাশের দেশগুলো যেভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে সেই ধারণা নিয়েও কাজ করতে হবে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে ডেঙ্গু সমাধানে এগিয়ে যেতে হবে। ২০ ধরনের অংশীজনকে নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচ কোটি মানুষের কাছে সচেতনতামূলক বার্তা গেছে।"
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ১০টি সুপারিশ করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সেমিনারে দুটি কী-নোট উপস্থাপন করা হয়। প্রথম কী-নোট উপস্থাপনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, "ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারি–বেসরকারি নানা পক্ষের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা মৃত্যু কমাতে পারে আর রোগী কমতে ভেক্টর কন্ট্রোল করতে হবে। দশদিন পরপর জরিপ করে মশা মারতে হবে।"
দ্বিতীয় কী-নোট প্রেজেন্টেশন দেন নিপসমের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ডা. গোলাম সারোয়ার। তিনি বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় রাজধানীর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ অ্যাডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইড ছিটানোতেই আটকে আছে।
"এগুলো এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ, ডেঙ্গু এবং অন্যান্য ভাইরাল রোগ প্রতিরোধে কার্যকর প্রমাণিত হয়নি", যোগ করেন তিনি।
এছাড়াও সরকারী-বেসরকারী পর্যবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এবং পাবলিক হেলথ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শাহ্ মনির হোসেন।
আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. এম মুশতাক হোসেন বলেন, "ডেঙ্গু রোগীদের সম্ভব হলে আলাদাভাবে চিকিৎসা করতে হবে। ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া প্রতিটা মানুষকে যদি আমরা মশারির মধ্যে রাখতে পারি তাহলে রোগী কমবে।"