বিমানের সেরা সিট কোনগুলো, যা বলছেন এক্সপার্টরা
যত দিন যাচ্ছে, বিমানের ইকোনমি ক্লাসের সিট ততই ছোট আর কম আরামদায়ক হচ্ছে। তবে এর মাঝেও কোচ কেবিনের সব আসন একরকম নয়, কিছু আসন বাকিগুলোর চেয়ে ভালো।
কিছু সিটে পা রাখায় জায়গা বেশি পাওয়া যায়, কিছু সিট এমন জায়গায় অবস্থিত যে কিছু যাত্রীর জন্য উড্ডয়ন সহজ ও উপভোগ্য হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ইকোনমি ক্লাসের সবচেয়ে ভালো সিট কোনগুলো।
নার্ভাস যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে ভালো সিট
অনেকেই বিমান ওড়ার সময় ভয় পান। অনেকে মাঝআকাশে পৌঁছে বিমান ভয়ানকভাবে দুলে উঠতে পারে ভেবে ভীত হয়ে ওঠেন। আবার অনেকে বিমান উড্ডয়নের কিংবা অবতরণের ঠিক পূর্বমুহূর্তে ভীত হয়ে পড়েন। এসব ক্ষেত্রে ডানার কাছাকাছি মাঝখানের সিট সবচেয়ে ভালো হতে পারে বলে জানান বিমান ভীতি দূর করা নিয়ে কাজ করা কোচ পল টিজার্ড।
মনে যদি উদ্বেগ জেঁকে বসে, সেক্ষেত্রে গ্যালি দেখা যায় এমন কোনো সিট বেছে নিতে পারেন। গ্যালিতে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা প্রায় সবসময়ই কোনো না কোনো কাজে উপস্থিত থাকেন। বৈরী পরিস্থিতিতে কেবিন ক্রুদের কথা বলতে বলতে কাজ করতে দেখলে মনে স্বস্তির অনুভূতি জন্মাতে পারে। চাইলে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের জানিয়েও রাখতে পারেন যে বিমানে উঠলেই আপনি নার্ভাস হয়ে পড়েন। সেক্ষেত্রে তারা মাঝে মাঝেই আপনাকে এসে দেখে যাবেন, অভয় দিয়ে যাবেন। এমন ক্ষেত্রে আইলের (করিডর) মাঝামাঝি কোনো সিটে বসলে তাদের সঙ্গে ভাব বিনিময়ে সুবিধা হবে।
বাচ্চা নিয়ে বিমানে ওঠা বাবা-মায়েদের জন্য সেরা সিট
যদি বাচ্চা নিয়ে বিমানে ওঠেন, তাহলে কেবিনের সামনের সারির কোনো সিটে বসলেই সম্ভবত সবচেয়ে ভালো হবে। সামনের সারির সিটগুলো বিজনেস ক্লাস বা প্রিমিয়াক ইকোনমিকে আলাদা করা দেয়ালের ঠিক পেছনেই অবস্থিত। একে বাল্কহেড রো-ও বলা হয়।
সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও ফ্লাইং উইথ আ বেবি ব্লগের সম্পাদক ক্যারি ব্র্যাডলি জানান, বাবা-মায়েদের জন্য এরকম সামনের সিটগুলো বেশ সুবিধাজনক। অনেক এয়ারলাইনস বাল্কহেড ওয়ালে বিনামূল্যে বাচ্চাদের বেসিনেট (দোলনা) যুক্ত করে দেয়।
প্রতিটি ফ্লাইটে সীমিত সংখ্যক বেসিনেট থাকে। আর বাল্কহেড সিটও সাধারণত দ্রুত শেষ হয়ে যায়, কারণ এসব সিটেও পা রাখার জন্য বাড়তি জায়গা পাওয়া যায়।
কোলের শিশু নিয়ে ভ্রমণ করলে জানালার পাশের সিটে বসলেও ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় জানালার পাশের সিটে কনুই রাখার সুবিধা পাওয়া যায়।
দীর্ঘ যাত্রায় ঘুমের প্রয়োজন আছে এমন যাত্রীদের জন্য
কিছু দূরপাল্লার বিমানে মূল কেবিনে মাত্র দুই সারি সিট থাকে। এতে ভেতরে বেশ প্রশস্ত জায়গা পাওয়া যায়, কেবিনটাকেও ঘিঞ্জি মনে হয় না। তাছাড়া এই টু-সিটারগুলো সাধারণত জানালার পাশে হয়। ব্র্যাডলি বলেন, যারা ঘুমাতে চান, তাদের জন্য জানালার পাশের সিটে তুলনামূলক ভালো হবে।
আর যাত্রাকালে ঘুমাতে চাইলে ইকোনমি ক্লাসের একেবারে শেষ সারির সিট এড়িয়ে যান। এসব জায়গায় আওয়াজ বেশি হয়, আরামদায়কও হয় না।
দ্রুত বিমান থেকে নামতে চান যারা
যারা তাড়াতাড়ি বিমান থেকে নামতে চান, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে কেবিনের সামনের দিকের সিট। সেটা সম্ভব না হলে আইলের কোনো সিট নেয়ার চেষ্টা করুন, যাতে বিমান থামলেই দেরি না করে নেমে পড়তে পারেন।
কখনও কখনও বাধ্য হয়ে জানালার পাশের বা মাঝের সারির সিটে বসতে হলে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের জানিয়ে রাখুন, যাতে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। ব্র্যাডলির পরামর্শ, এমন ক্ষেত্রে ক্রুদের জানিয়ে রাখবেন আপনার একটু আগেভাগে বিমান থেকে নামা দরকার। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা তখন সাহায্য করতে পারবেন। তবে সাহায্য যে পাবেনই, তার শতভাগ নিশ্চয়তা কিন্তু নেই।