'ইসরায়েল থেকে ফ্লাইট নামার আগেই' রাশিয়ার বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ল যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা
ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে বিমানের একটি ফ্লাইট নামার খবরে রাশিয়ান দাগেস্তান অঞ্চলের একটি বিমানবন্দরে ঢুকে পড়েছিল যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। গতকাল (রবিবার) দেশটির মাখাচকালা বিমানবন্দরে এমন ঘটনাটি ঘটে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে বিমানবন্দরটির একটি টার্মিনালের মধ্য দিয়ে ছুটছে। কেউ কেউ জোর করে দরজা খুলে রানওয়েতে প্রবেশ করছে। 'আল্লাহু আকবার' স্লোগানে সেখানে থাকা বিমানগুলোকে ঘিরে ধরছে।
এছাড়াও অনেককে বিমানবন্দরের বাইরে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের কাগজ-পত্র চেক করতে দেখা যায়। মূলত যাত্রীদের সাথে ইসরায়েলি পাসপোর্ট রয়েছে কি-না, সেটি খুঁজে দেখছে। কেউ কেউ আবার চিৎকার করে ইহুদি বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। তবে এই ভিডিওগুলোর সত্যতা এখনো জানা যায়নি৷
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে বোমা হামলা করছে ইসরায়েল৷ ধারণা করা হচ্ছে যে, সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েই ইসরায়েলি কিংবা ইহুদি নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল।
দাগেস্তান রাশিয়ার দক্ষিনাঞ্চলে অবস্থিত একটি অঞ্চল। এখানে রয়েছে প্রায় ৩১ লাখ জনসংখ্যার বসবাস; যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম।
এদিকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, "যেকোন জায়গায় ইসরায়েলি নাগরিক এবং ইহুদিদের ক্ষতি করার জন্য বেশ জোরালো প্রচেষ্টা' দেখা যাচ্ছে।"
বিবৃতিতে বলা হয়, "ইসরায়েল আশা করে যে, রাশিয়ান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সকল ইসরায়েলি ও ইহুদি নাগরিকদের দেশটির সব জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে৷ একইসাথে দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।"
দাগেস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। বর্তমানে তারা চিকিৎসা সহায়তা পচ্ছেন। যদিও ঠিক কারা আহত হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
অন্যদিকে দাগেস্তানের গভর্নর সের্গেই মেলিকভ বিমানবন্দরে এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের বাসিন্দারা গাজার মানুষের দুর্ভোগের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে এই ধরনের দাঙ্গার ঘটনা 'আপত্তিকর'। ঘটনাটি 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথভাবে মূল্যায়ন করবে।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে জনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অভিযোগ এনে একটি ফৌজদারি মামলাও করা হয়েছে। গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় রাশিয়ার বিমান সংস্থা রোজাভিয়াসিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, বিমানবন্দরে থাকা সমস্ত 'অননুমোদিত নাগরিক'কে বিমানবন্দর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরের পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তবে বিমানবন্দরটি ৬ নভেম্বর পর্যন্ত সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
অন্যদিকে গত শনিবার দাগেস্তানের খাসাভিউর্ট শহরের একটি হোটেলের বাইরে বহু যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ভিড় করে। তাদের অনুমান ছিল, কিছু ইসরায়েলি নাগরিক সেখানে অবস্থান করছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিএইচপি দাগেস্তান জানায়, পরবর্তীতে পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতার কয়েকজনকে হোটেলে ঢুকতে দেয়। তারা তখন নিজেরাই দেখতে পায় যে, সেখানে কোনো ইসরায়েলি নেই।