কোয়ারেন্টিনে বাড়িতে বসেই মহাকর্ষের সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন নিউটন!
মহামারী করোনায় থমকে আছে বিশ্ব। কিন্তু আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে এমন এক পৃথিবীতে বাস করছিলেন বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও। সেসময় ইউরোপজুড়ে চলছিল বুবোনিক প্লেগের মহামারী। তখনও এমন লকডাউন জারি করা হয়েছিল। আর এই লকডাউনে আটকে থাকা অবস্থায়ই নিউটন তার বিখ্যাত মহাকর্ষ সূত্রটি আবিষ্কার করেছিলেন, যা বিশ্বকে চিরতরে বদলে দিয়েছিল।
১৬৬৫ সালে যখন বুবোনিক প্লেগের মহামারী শুরু হয়, নিউটন তখন ট্রিনিটি কলেজে তার অনার্স ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করছেন। মহামারী থেকে বাঁচতে সবাই তখন লকডাউনে ঘরে বন্দী।
এই লকডাউনে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তরুণ বিজ্ঞানী নিউটন তখন অপটিকস, ক্যালকুলাস ও মহাকর্ষ নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। আর এই সময়ই তিনি আবিষ্কার করেন মহাকর্ষের বিশ্ববিখ্যাত সূত্র।
নিউটনের জীবনীগ্রন্থ 'মেময়ের'স অফ স্যার আইজ্যাক নিউটন' থেকে এমন বর্ণনা পাওয়া যায়।
একদিন আইসোলেশনে থাকা নিউটনের সঙ্গে দেখা করতে যান তার এক বন্ধু। বইটিতে সেদিনের বর্ণনায় নিউটনের বন্ধু বলছেন- "আমি আর নিউটন বাড়ির পেছনে বাগানে গেলাম। আপেল গাছের তলায় বসে চা খেতে খেতে আলোচনা করছিলাম আমরা। নিউটন আমাকে বলছিল গাছ থেকে আপেল মাটিতে পড়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে ও। সেই পুরানো প্রশ্ন বারবার ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, 'আপেলটি বারবার সমকোণে মাটিতে এসেই পড়ে কেন? ডানে, বামে বা উপরে কেন চলে যায় না? নিশ্চয়ই পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কিছু একটা টানে আপেলটিকে। তার মানে পদার্থের নিশ্চয়ই আকর্ষণ ক্ষমতা আছে। আর সেটা কত শক্তিশালী হবে তা নির্ভর করে তার ভরের উপর'।"
অর্থাৎ সামান্য একটা আপেলের পতন থেকে দুনিয়া কাঁপানো সূত্র বা তত্ত্ব ভাবিয়েছিল নিউটনকে।
প্লেগের মহামারী যখন শেষ হয়, তখন তার আবিষ্কারের কাগজপত্র জমা দেন নিউটন। আর এর ফলেই ট্রিনিটি কলেজের ফেলোশিপের মর্যাদা পান তিনি।
৩২৫ বছর আগের তেমন এক বিশ্বে আমরাও আটকে আছি যেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত পৃথিবীতে চলছে আরেক লকডাউন। বাড়িতে বসে আমরা অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ছি হয়তো। কিন্তু সঠিক অধ্যবসায় থাকলে কে জানে, হয়তো দুনিয়া কাঁপানো এমন তত্ত্ব আপনিও আবিষ্কার করে ফেলতে পারেন।