ভাগ্যাহত এক সংগীতশিল্পীকে চাকরি দিল 'স্বপ্ন'
শখের কীবোর্ডবাদক এহসানুর রশীদ পুনম চাকরি করতেন ঢাকার একটি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানে। হঠাৎ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসার পেছনে সর্বস্ব ব্যয় করে সুস্থ হয়ে উঠলেও চাকরি ফিরে পাননি।
সেইসঙ্গে পৃথিবীতে মহামারি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঘটায় নতুন চাকরিও জোটাতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা চালানো শুরু করেন পুনম।
এরইমধ্যে তাকে নিয়ে করা সংবাদ চোখে পড়ে 'স্বপ্ন'র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের। তিনি পুনমকে কোম্পানির ইনভেন্টরি অ্যান্ড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট অফিসার পদে চাকরি দেন।
শুক্রবার পুনমের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।
সাব্বির হাসান নাসির বলেন, 'অনলাইনে প্রতিবেদনটা দেখেই মনে হচ্ছিল, পুনমের জন্য কিছু করতে পারলে ভালোলাগত। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই মানুষটির জন্য কিছু একটা করার চেষ্টা করলাম আমরা। তার জন্য এটুকু করতে পেরে এখন বেশ ভালো লাগছে।'
পুনম বলেন, 'এমন দুঃসময়ে চাকরি পাব, এটা ভাবতেও পারিনি। আমাকে যে সম্মান আজ স্বপ্ন দিল, সেটা সততার সঙ্গে রক্ষা করতে চাই। নতুন পদে নতুন চাকরিটা ভালোভাবে করতে চাই।'
পুনমের জন্ম রাজশাহীতে। ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে ব্যস্ত ছিলেন মিউজিক নিয়ে। পাশাপাশি সম্পন্ন করেছেন গ্র্যাজুয়েশন। চাকরিও করেছেন একাধিক কোম্পানিতে। পুনম সে সময় মিউজিশিয়ান হিসেবে যুক্ত ছিলেন 'স্যালভেশন' ব্যান্ডে। 'স্টার সার্চ' প্রতিযোগিতায় সেরা ব্যান্ড হিসেবে বিজয়ী হয়েছিল এটি। এরপর ঢাকায় চাকরিও চলছিল তার ভালোভাবে। কিন্তু গত বছর তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
পুনম তখন একটি গার্মেন্টসের অ্যাডমিন বিভাগের কর্মকর্তা। অফিস শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে একটি প্রাইভেটকার এসে ধাক্কা দেয় তাকে।
এই করোনা মহামারির মধ্যে এমন মহানুভবতা আগেও দেখিয়েছে 'স্বপ্ন'।মহামারি শুরুর পরপরই ১১ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে চাকরি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে 'স্বপ্ন'র কেনাকাটা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০০ কর্মী নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।