হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর মেয়রকে মৃত পাওয়া যায়
যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠার পর নিখোঁজ থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের মেয়র পার্ক-উন-সু এর লাশ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার মেয়র পার্কের মেয়ে পুলিশকে তার বাবার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জানানোর পর থেকে তাকে খুঁজতে থাকে সিউল পুলিশ। এর কয়েকঘন্টা পর শুক্রবার সকালে উত্তর সিউলের একটি পাহাড়ে তাঁর লাশ খুঁজে পায় পুলিশ।
দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানাচ্ছে, বুধবার সন্ধ্যায় পার্কের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তার এক সাবেক সেক্রেটারি। পার্কের বিরুদ্ধে 'অযাচিত শারীরিক সম্পর্ক' ও 'অসঙ্গত বার্তা পাঠানো'র অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, কর্মঘণ্টায় তিনি যৌন হয়রানি ও অনুপযুক্ত অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন। কার্যালয় সংযুক্ত বেডরুমে তাকে জোর করে আলিঙ্গনও করা হয়েছে। কর্মঘণ্টা শেষ হওয়ার পর অন্তর্বাসের ছবি ও নোংরা বার্তা পাঠাতেন পার্ক।
তবে পুলিশ এই অভিযোগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, পার্কের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে।
ডয়েচে ভেলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মেয়র পার্কের বাসভবনের একটি টেবিলে তার হাতে লেখা একটি চিঠি পাওয়া গেছে। মেয়রের পরিবারের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার টেলিভিশনে সেটি প্রচার করা হয়েছে।
চিঠিতে পার্ক লিখেছেন, ''আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার সঙ্গে আমার জীবনে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আমার পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইছি, কারণ, আমি শুধু তাদের কষ্টই দিয়েছি। দয়া করে আমার দেহ পুড়িয়ে আমার মা-বাবার কবরে ছড়িয়ে দেবেন।"
দীর্ঘদিনের সুশীল সমাজ প্রতিনিধি ও মানবাধিকার আইনজীবী পার্ক ২০১১ সালে সিউলের মেয়র নির্বাচিত হন। গত বছরের জুনে মহানগরটির প্রথম মেয়র হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন তিনি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের উদারপন্থি 'ডেমোক্রেটিক পার্টি'র সদস্য পার্ককে আগামী ২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের অন্যতম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হতো।
দেশে ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের মধ্যে দুর্নীতির বন্ধনের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার হিসেবে খ্যাতি ছিল তার।