দাপুটে জয়ে উইজডেন ট্রফি ইংল্যান্ডের
চতুর্থ দিনেই সিরিজ জয়ের উদযাপন করতে পারতো ইংল্যান্ড। কিন্তু অপেক্ষা বেড়েছিল স্বাগতিকদের, বাধ সেধেছিল বৃষ্টি। চতুর্থ দিনটি চলে যায় বৃষ্টির পেটে। পঞ্চম দিনে এমন কিছু আর হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি থাকা ৮ উইকেট নিমেষেই তুলে নিলো ইংল্যান্ড। তাতে মিললো ২৬৯ রানের বিশাল এক জয়।
এই জয়ে তিন ম্যচের টেস্ট সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিলো ইংল্যান্ড। পুনরুদ্ধার হলো উইজডেন ট্রফিও। সিরিজ জয়ের নায়ক হয়ে থাকলেন জেমস অ্যান্ডারসনের পর দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা স্টুয়ার্ট ব্রড। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে বল হাতে নিজের কাজটি করার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও দলকে পথ দেখিয়েছেন ইংলিশ এই পেসার।
ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ব্রডের বোলিং তোপে পড়ে প্রথম ইনিংসে ১৯৭ রানে অলআউট হওয়া উইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংস থেমে গেছে মাত্র ৩৭.১ ওভারে ১২৯ রানেই। প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রান করে ১৭২ রানের লিড পায় জো রুটের দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ২২৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। ক্যারিবীয়দের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯৯ রান। এই রান পাড়ি দিতে নেমে সামান্যতম লড়াইও করতে পারেনি প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজ দারুণ সূচনা করা জেসন হোল্ডারের দল।
পুরো ম্যাচজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন ব্রড। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ও টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সপ্তম বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা ব্রড যেন ম্যাচটি নিজের করে নিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে হঠাৎ ছন্দপতনে ইংল্যান্ড যখন মহা বিপদে, তখন ব্যাট হাতে ত্রাতা হয়ে ওঠেন ম্যাচ সেরা ব্রড। খেলেন ৪৫ বলে ৬২ রানের ইনিংস।
এরপর বল হাতে তারই রাজত্ব। ক্যারিবীয়দের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩১ রান খরচায় ৬ উইকেট তুলে নেন ব্রড। ইংলিশ এই পেসারের তোপেই ১৯৭ রানে গুটিয়ে যায় উইন্ডিজ। সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসেও বল হাতে শাসন করেছেন ব্রড। ৫ উইকেট নেওয়া ক্রিস ওকসের সুরে সুর মিলিয়ে ৪ উইকেট বোগলদাবা করেন ৩৪ বছর বয়সী এই পেসার।
ক্যারিবীয়দের সামনে ছিল ৩৯৯ রানের বিশাল রক্ষ্য। এই রান টপকানো যে খুব কঠিন কাজ, সেটা জানা ছিল তাদের। তবে দুইদিন হাতে থাকায় চেষ্টা করার সুযোগ ছিল তাদের। এরপর চতুর্থ দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ড্র করার সুযোগও এসেছিল উইন্ডিজের সামনে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে একটু সময়ের জন্যও ক্যারিবীয়দের লড়াকু দেখায়নি।
বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে স্কোরকার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ওপেনার জন ক্যাম্পবেলকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬ রানে ফেরেন নাইট ওয়াচম্যান কেমার রোচও। বৃষ্টির কারণে এদিন আর খেলা হয়নি। ২ উইকেটে ১০ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের সৌভাগ্যের দিকে তাকিয়ে থাকে উইন্ডিজ। কিন্তু পঞ্চম দিনটা দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠে তাদের জন্য।
এদিন মাত্র ৩১.১ ওভার ব্যাটিং করতে পেরেছে ক্যারিবীয়রা। সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন শেই হোপ। এ ছাড়া ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ১৯, শামার ব্রুকস ২২, জার্মেইন ব্ল্যাকউড ২৩ ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ১২ রান করেন। ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস ৫টি ও স্টুয়ার্ট ব্রড ৪টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৩৬৯ ও ২২৬/৩, ডিক্লেয়ার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯৭ ও ১২৯ (ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ১৯, শেই হোপ ৩১, শামার ব্রুকস ২২, জার্মেইন ব্ল্যাকউড ২৩; স্টুয়ার্ট ব্রড ৪/৩৬, ক্রিস ওকস ৫/৫০)।
ফল: ইংল্যান্ড ২৬৯ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: স্টুয়ার্ট ব্রড (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।